প্লাজমা ডোনার সেজে করোনা রোগী থেকে নিতেন হাজার হাজার টাকা!
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২০, ০৯:১৯ AM , আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০, ০৯:২৪ AM
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মুমূর্ষু করোনা রোগীর জন্য 'প্লাজমা চাই' বিজ্ঞাপন দেখে দাতা সেজে এগিয়ে আসে। তার পর নিজেই ফোন দেয় রোগীর স্বজনকে। এছাড়াও ফেসবুকে ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল নম্বর দিয়ে নিজেকে করোনা থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দিয়ে রোগীকে প্লাজমা দেওয়ার আগ্রহ দেখায়। এভাবেই প্লাজমা দাতা সেজে করোনা রোগীর পকেট কেটে নেয় হাজার হাজার টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে বন্ধ করে দেয় নিজের মোবাইল ফোন। ঘটনায় জড়িত যুবক চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার গুলবাহার গ্রামের শরীফ খান বাবু।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মতিঝিল এলাকা থেকে প্রতারণার এমন অভিযোগে শরিফ খান ওরফে বাবু (৩২) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এই শহরে তার কোনো স্থায়ী আবাস পাননি গোয়েন্দারা। তার বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় একটি মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। আদালত রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর না করে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, প্লাজমা ব্যাংক অব বাংলাদেশ (কোভিড-১৯) নামে ফেসবুকে একটি গ্রুপ আছে। গ্রুপটির সদস্য সংখ্যা প্রায় দুই লাখ। করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগীর প্লাজমার প্রয়োজন হলে তার স্বজনেরা এই গ্রুপে রক্তের গ্রুপ লিখে সহযোগিতা চান। সঙ্গে তারা নিজেদের ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বরও দিয়ে দেন। প্রতারকেরা তখন এসব মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করেন। এক্ষেত্রে তারা সেসব স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন যারা দুর্লভ রক্তের গ্রুপের (এ নেগেটিভ, বি নেগেটিভ, ও নেগেটিভ, এবি নেগেটিভ) প্লাজমা চেয়ে পোস্ট দেন।
ডিবির তেজগাঁও অঞ্চলের সহকারী কমিশনার মুজিব আহম্মদ পাটওয়ারী বলেন, স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতারকেরা তাদের অবস্থান জানতে চান। স্বজনরা যদি তাদের অবস্থান চট্টগ্রাম বলেন, প্রতারকেরা তখন তাদের অবস্থান দূরবর্তী কোনো জেলার কথা বলেন। তারা তখন গাড়ি ভাড়া বাবদ কিছু অর্থ তাদের পাঠাতে বলেন। স্বজনেরা সেই অর্থ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পাঠানোর পরই প্রতারকেরা টাকা নিয়ে ফোন বন্ধ করে দেয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, প্রতারিত হয়ে প্লাজমা ব্যাংক অব বাংলাদেশ (কোভিড-১৯) গ্রুপের অ্যাডমিনের কাছে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন। তার কাছ থেকে মুঠোফোন নম্বর নিয়ে তদন্ত শুরু করেন তারা। একপর্যায়ে শরিফ খানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। শরীফ খান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অন্তত ২০-২২ জনের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছে বলে জানিয়েছে। এমন আরও অনেক প্রতারক আছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাও অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।