হাইকোর্টে আইজিপি অপসারণ চেয়ে করা রিট খারিজ, আন্দোলনের নেপথ্যে কারা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩২ PM , আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩৬ PM
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমকে অপসারণের দাবিতে রাজপথে আন্দোলনে নেমেছে একটি মহল। একই সাথে উচ্চ আদালতের শরণাপন্নও হয়েছে তারা। যদিও হাইকোর্ট বেঞ্চ রিট আবেদনটি প্রাথমিক শুনানি শেষে খারিজ করে দিয়েছেন। রিটটি করার পূর্বে একাধিক আইনজীবী বর্তমান সরকারকে আল্টিমেটাম দিয়ে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে, জাতীয় নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে হঠাৎ করে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া অন্য একটি স্পর্শকাতর ইস্যুকে সামনে নিয়ে কেন আইজিপির বিরুদ্ধে এ ধরনের ভূমিকা? এ ছাড়া আন্দোলন ও মামলা পরিচালনায় কারা উস্কানি ও অর্থায়ন করছে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
আদালত ও আন্দোলনকারী সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে ও হত্যাকাণ্ড পরবর্তী গোয়েন্দা সংস্থা স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) প্রতিবেদনে তৎকালীন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের ইন্দন রয়েছে। সে সময় হত্যাকাণ্ডের পরপরই এই মামলায় আটক করা হয় সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন পিন্টুকে। পরবর্তীতে রাজশাহী কারাগারে মৃত্যু হয় এই বিএনপি নেতার।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও স্বাধীন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে সাবেক ৫ পুলিশ কর্মকর্তার নাম আসে। এর মধ্যে তৎকালীন স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি বাহারুল আলমও রয়েছেন। এ ঘটনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ মহাপরিদর্শকের দায়িত্ব পাওয়া বাহারুল আলমের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে পিন্টু স্মৃতি সংসদ।
অপরদিকে অপসারণ চেয়ে লিগ্যাল নোটিশের পর হাইকোর্টের রিট করা হয়। ন্যাশনাল লইয়ার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এস এম জুলফিকার আলী জুনু এ রিট দায়ের করেন। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দায়ের করা রিট খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রিটকারী আইনজীবী আদালতে উপস্থিত না থাকায় রিট আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ ও ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
এ ছাড়া গত ৬ ডিসেম্বর বাহারুল আলমকে বরখাস্ত করতে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি দিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট জুনু। চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় জীবনের এক করুণতম অধ্যায় ২০০৯ সালের বিডিআর হত্যাকাণ্ড, যেখানে দেশের ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ অসংখ্য সদস্য নির্মমভাবে শহীদ হন, এখনও জাতীয় বেদনা ও বিচার প্রত্যাশার এক অমলিন স্মৃতি হয়ে আছে। সম্প্রতি জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের দাখিলকৃত রিপোর্টে বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. বাহারুল আলমের নাম উত্থাপিত হওয়ায় দেশের ন্যায়বিচার, জনআস্থা এবং বিচারপ্রতিষ্ঠার প্রশ্ন নতুন করে আলোচনায় উঠে এসেছে। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সর্বোচ্চ পদে দায়িত্ব পালনরত একজন কর্মকর্তার নাম এমন একটি রাষ্ট্রদ্রোহী ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উল্লেখ হওয়ার ঘটনাটিকে অত্যন্ত সংবেদনশীল ও গুরুতর করে তুলেছে।