কম দামে স্কুলের মালপত্র বিক্রির অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৫ AM
স্কুলের মালপত্র গোপনে কম দামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়নের পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দুটি পিকআপভর্তি শতাধিক বেঞ্চ, ফ্যান ও রড বিক্রির সময় জব্দ করে গ্রামবাসী। এ সময় সহকারী শিক্ষক আব্দুল বাতেন ও অফিস সহায়ক সুমনকে আটক করেন তারা।
বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। তবে প্রধান শিক্ষকের দাবি, মালপত্রগুলো স্কুলের এডহক কমিটির রেজুলেশনের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে। জব্দ মালপত্র স্থানীয় ইউপি সদস্যের তত্ত্বাবধানে রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়ার যোগসাজশে প্রায় ১০ লাখ টাকার মালপত্র ৩ লাখ টাকায় গোপনে বিক্রি করা হয়। মালপত্র বিক্রিয় সময় সহকারী শিক্ষক আব্দুল বাতেন, অফিস সহায়ক সুমনকে আটক করেন স্থানীয়রা। তারা শতাধিক পুরোনো বেঞ্চ, ফ্যান গোপনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন। রাতের আঁধারে পিকআপ ভ্যানে করে সেগুলো নেওয়ার সময় আটক করা হয়।
এক পর্যায়ে কৌশলে শিক্ষক আব্দুল বাতেন ও সুমন মালপত্র ফেলে দিয়ে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মালপত্র জব্দ করে।
স্থানীয়দের দাবি, কোনো প্রতিষ্ঠানের জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে দুই লাখ টাকার অধিক হলে দরপত্র আহ্বান করতে হয়। প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও এডহক কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে ১০ লাখ টাকার মালপত্র গোপনে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। সেগুলো পিকআপ ভ্যানে করে নেওয়ার সময় আটক করেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ বলেন, স্কুলের বেঞ্চ, ফ্যান দরপত্র ছাড়াই বিক্রি করা হয়েছে। বৈধভাবে বিক্রি করা হলে রাতের আঁধারে কেন? সেগুলো এলাকাবাসী আটক করে আমাকে খবর দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি প্রায় ১০ লাখ টাকার মালপত্র গোপনে মাত্র ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের শাস্তি হওয়া দরকার।
পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলমের ভাষ্য, ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেজুলেশন করে মালপত্র বিক্রি করা হয়েছে। মালপত্র বিক্রির টাকা স্কুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে। তবে দরপত্র ছাড়া বিক্রি করা সঠিক হয়নি।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, নতুন ভবন নির্মাণের পর পুরোনো বেঞ্চ ও ফ্যান বিক্রির জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় একটি মহল অপপ্রচার করছে। বিক্রির আগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়নি।
সোনারগাঁ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, বিক্রির প্রক্রিয়ায় নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে। প্রয়োজনীয় নথি পর্যালোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।’