পুলিশ সপ্তাহ শুরু কাল, যা যা থাকছে

পুলিশ সপ্তাহ
পুলিশ সপ্তাহ  © সংগৃহীত

আগামীকাল মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫। তবে এবারের আয়োজন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এবং ভিন্ন কাঠামোয় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা নিশ্চিত করার নির্দেশনা নিয়েই এবারের পুলিশ সপ্তাহের আয়োজন করা হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, পুলিশ এবার নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার করেছে। এবারের পুলিশ সপ্তাহ হবে তিন দিনব্যাপী, যেখানে অতীতের মতো বড় ধরনের দাবি-দাওয়ার পসরা থাকছে না। তবে সুনির্দিষ্ট ছয়টি দাবি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে উত্থাপনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়েছে। স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠন, এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ ভাতা, স্বতন্ত্র সাইবার ইউনিট প্রতিষ্ঠাসহ ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ দাবি এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

পুলিশ সপ্তাহের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে থাকছে প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতি প্রদান। র‌্যাব ও পুলিশের ২৬৮ জন কর্মকর্তা ও সদস্যকে দেওয়া হবে 'পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিস ব্যাজ'। রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের প্যারেড গ্রাউন্ডে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. বাহারুল আলম তাদের হাতে এই ব্যাজ পরিয়ে দেবেন। ২০২৪ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।

তবে এবারের পুলিশ সপ্তাহে থাকছে কিছু ভিন্নতা। প্যারেড হবে না, থাকবে না পত্রিকায় কোনো ক্রোড়পত্র, রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কোনো সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হবে না। প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও থাকছে না কোনো সেশন। তবে শিল্ড প্যারেড ও অন্যান্য প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে।

এছাড়া এবার প্রথমবারের মতো ‘কেমন পুলিশ দেখতে চান’ শীর্ষক এক বিশেষ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করবেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে দেশের নীতিনির্ধারকদের সরাসরি মতবিনিময়ের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।

তিন দিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহের প্রথম দিন রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স অডিটোরিয়ামে উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি পুলিশের সব ইউনিটের সঙ্গে ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন এবং পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির স্টল উদ্বোধন করবেন। দ্বিতীয় দিন পুলিশের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিবদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সিআইডি, র‍্যাব, পিবিআই, ট্যুরিস্ট পুলিশ, এটিইউসহ বিভিন্ন ইউনিটের কার্যক্রম তুলে ধরা হবে এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপিত হবে। শেষ দিনে আইজিপির নেতৃত্বে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতবিনিময় সভা, পুনাক সমাবেশ ও আনন্দ মেলার আয়োজন থাকবে।

ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এবারের পুলিশ সপ্তাহে ৬২ জন পুলিশ সদস্যকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম) প্রদান করা হবে।

এদিকে সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম জানান অনাড়ম্বর নয়, এ বছর কার্যকর পুলিশ সপ্তাহ পালন করতে চায়।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরিকল্পনা শুনে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া এবারের পুলিশ সপ্তাহে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের অভিমত জানাবেন।

প্রশংসনীয় ও ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পুলিশ ও র‍্যাবের ২৬৮ কর্মকর্তা ও সদস্য পাচ্ছেন ‘পুলিশ ফোর্স এক্সেমপ্ল্যারি গুড সার্ভিস ব্যাজ’। পুলিশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এ পুরস্কার এবারের পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে দেওয়া হবে। গত বছর আইজিপি ব্যাজ পেয়েছিলেন ৪৮৮ কর্মকর্তা ও সদস্য।

আসন্ন পুলিশ সপ্তাহের মধ্যে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের প্যারেড গ্র্যাউন্ডে আইজিপি এ ব্যাজ পরিয়ে দেবেন। গতকাল রোববার আইজিপির সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আয়োজিত এবারের পুলিশ সপ্তাহের মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা স্পষ্টভাবে নির্ধারিত হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!