ঢাকা মহানগরীতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ‘অলআউট অ্যাকশনে’ যাচ্ছে ডিবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৫, ০১:০৩ PM , আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৪:১৯ PM

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) রেজাউল করিম মল্লিক বলেছেন, মহানগরীর বিভিন্ন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘অলআউট অ্যাকশনে’ যাচ্ছে ডিবি। এ ছাড়া ছোট-বড় যেকোনো অপরাধ ও অপরাধীর ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করেছে ডিবি।
আজ শনিবার (১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশে ডিবি কর্তৃক পরিকল্পিত কার্যক্রম-সংক্রান্তে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) বলেন, ‘অগ্নিঝরা মার্চের প্রথম দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি এ দেশের সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের, যাদের সীমাহীন ত্যাগ ও দেশপ্রেমের বদৌলতে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম মাতৃভূমি। একই সঙ্গে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের বীর শহিদ ও আহতদের, যারা বুকের রক্ত দিয়ে আমাদের একটি সম্ভাবনাময় নতুন বাংলাদেশ গড়ার বীজ বুনে দিয়েছেন। সে লক্ষ্যে তেজোদ্দীপ্ত হয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি।’
তিনি বলেন, ‘সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র মাহে রমজান সমাগত। এই পবিত্র মাসে নগরবাসীর নিরাপত্তা বিধানের জন্য ক্লান্তিহীন কাজ করে যাচ্ছে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ। ডিবি বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আজ থেকে আমরা ডিবির চলমান কার্যক্রমের পাশাপাশি রমজানকে সামনে রেখে বিশেষ অভিযান শুরু করতে যাচ্ছি। এটা হচ্ছে এক ধরনের বিশেষ গোয়েন্দা অভিযান। যেটাতে ছদ্মবেশে আমাদের সদস্যরা মানুষের মধ্যে থেকে অপরাধীদের শনাক্ত করবে।’
রেজাউল করিম মল্লিক বলেন, ‘রোজার সময় মানুষের কর্মযজ্ঞ বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে আর্থিক লেনদেন বেশি হয়। শপিংমল, ব্যাংক, বীমাগুলোয় মানুষের ভিড় বাড়ে। রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও সদরঘাটসহ অন্যান্য জায়গাতে মানুষের উপস্থিতি বাড়ে। এসব জায়গায় কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে, সে জন্য আমাদের গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি দূরের যাত্রা পথ বিশেষ করে বাসে কোন দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে, সে লক্ষ্যে গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে আমরা আগে থেকেই ডিবির তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছি।’
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা প্রতিবেদন বলছে চুরি ছিনতাই ডাকাতির সঙ্গে যারা যুক্ত হচ্ছে তাদের বেশির ভাগের বয়স ১৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে। এদের অনেকেই কিশোর গ্যাং। তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আবার কিছু ফ্যাসিস্ট পতিত রাজনৈতিক শক্তি তাদের ইন্ধন দিয়ে অপরাধ কার্যক্রমে জড়িয়ে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যৌথ বাহিনী সারাদেশে তৎপরতা বাড়িয়েছে। অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীও মাঠে আছে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আমরা বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে তাদের সহায়তা করছি। যা ভবিষ্যতে আরো বৃদ্ধি পাবে।’
ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মহানগরীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। আমাদের কাজ হচ্ছে গোয়েন্দা নজরদারি শক্তিশালী করা। আমরা সে বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছি। আশা করি কিছুদিনের মধ্যে আপনারা আরো ভালো অবস্থা দেখতে পাবেন। জনসাধারণের প্রতি আমাদের আহ্বান এখন ডিবি পরিচয়ে কেউ গোপনে তুলে নেয়া বা সিভিল পোশাকে তল্লাশি এই ধরনের কাজ কেউ করলে আমাদেরকে জানান। পাশাপাশি নাশকতা করতে পারে এমন কোন তথ্য থাকলে ডিবিকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন। আপনাদের পরিচয় গোপন রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ মামলা তদন্ত থেকে আরম্ভ করে চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেফতারপূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসতে ডিবি বদ্ধপরিকর। তারই অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ডিবি কর্তৃক উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ছিনতাইকারী, ডাকাত ও অভ্যাসগত অপরাধীকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। গুণগত মান বজায় রেখে এবং অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় ডিবি কাজ করে থাকে। আমাদের কাজে যেমন স্বকীয়তা রয়েছে, তেমনি নিশ্চিত করা হয়েছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। আমরা যেমন সাধারণ মানুষের ভরসার আশ্রয়স্থল হতে চাই, তেমনি অপরাধীদের জন্য হতে চাই আতঙ্ক। সে মূলনীতি নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এ সময় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন অ্যান্ড গোয়েন্দা-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম, বিপিএম-সেবা; যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া; যুগ্ম পুলিশ কমিশনার, (সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার-দক্ষিণ) সৈয়দ হারুন অর রশীদ বিপিএম ও উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস্ বিভাগ) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান, পিপিএম-সেবাসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।