শ্বশুরবাড়ির গরু চুরি করে কারাগারে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা

স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোহাম্মদ আলী ও মো. জাকির হোসেন
স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মোহাম্মদ আলী ও মো. জাকির হোসেন  © টিডিসি সম্পাদিত

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় চোরাই গরু সহ আটক করে গণধোলাই দিয়ে মোহাম্মদ আলী, মো. জাকির হোসেন, মো. ইসমাইল ও মো. দুলাল নামের চারজনকে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। এদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী উপজেলার আছলামপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ও মো. জাকির হোসেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক।

আজ শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) গরুর মালিক মো. ইয়াছিনের দায়েরকৃত মামলায় আটক জাকির, মো. আলী ও ইসমাইলকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। মো. দুলাল নামের আরেকজন চরফ্যাশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা সবাই আছালাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। 

এর আগে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে তাদেরকে আছলামপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ড থেকে আটক করা হয়। আটকের পর পর চরফ্যাশন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সিকদার হুমায়ুন কবির ও সদস্য সচিব মো. কামরুজ্জামান শাহিন যৌথ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আছলামপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো. আলী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মো. জাকির হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের দু’জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ৩০ জানুয়ারি থেকে তাদের সঙ্গে দলীয় কোনো সম্পর্ক নেই। তাদের কৃতকর্মের কোনো দায়ভার সংগঠন বহন করবে না। 

গরুর মালিক আছলামপুর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. ইয়াছিন জানান, তিনি একটি গরু ক্রয় করে স্থানীয় আবুল কাশেম নামের একজনের কাছে বর্গা হিসেবে লালনপালন করতে দেন। গত ২২ দিন আগে গরুটি চুরি হয়ে যায়। এর পর থেকে গরু খোঁজার জন্য তিনি নানা জায়গায় গিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) জানতে পারেন তার গরুটি ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আলীর বাড়িতে আছে। খবর পেয়ে তিনি মো. আলীর বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় গরুটি সে লালমোহনের রায়চাঁদ বাজার থেকে কিনে এনেছেন। এর পর স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তিনি গরুটি শনাক্ত করলে এক পর্যায়ে আলী স্বীকার করেন সে গরুটি মো. জাকিরের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকায় কিনেছেন। পরে জাকিরকে আনা হলে সে ইসমাইল, দুলাল ও আলমগীর নামের আরও তিনজনের নাম জানায়। এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন জাকির, মো. আলী, ইসলামাইল ও দুলালকে গণধোলাই দিলে তারা গরু চুরির কথা স্বীকার করেন। তারা জানান, জাকিরের শ্বশুর বাড়ি থেকে এই গরুটি চুরি করে এনে আলীর কাছে কম দামে বিক্রি করেছেন। পরে তাদের চারজনকে চরফ্যাশন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে চুরির সঙ্গে জড়িত পাঁচ জনকে আসামি করে চরফ্যাশন থানায় মামলা করেন গরুর মালিক মো. ইয়াছিন। পরে আজ শুক্রবার সকালে জাকির, আলী ও ইসমাইলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়। 

এই বিষয়ে চরফ্যাশন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সিকদার হুমায়ুন কবির কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান হাওলাদার জানান, গরুর মালিক ইয়াছিনের মামলার আলোকে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার সকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ