আইএইচটি শিক্ষার্থীদের নির্যাতন
মামলার ১০ দিনেও সজলকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:০৬ AM , আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৪৯ AM
বগুড়ার ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় মামলার ১০ দিন পরও আসামি বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল কুমার ঘোষকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।সজলের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে রবিবার দুপুর থেকে ১০ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বগুড়া গভর্নমেন্ট ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির শতাধিক শিক্ষার্থী।
পরে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে রাত ১০টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়েছে তারা। ফিজিওথেরাপি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান আতিক বলেন, পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সজল ঘোষকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে। এ আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সজলকে গ্রেপ্তার না করা হলে আবার আন্দোলন শুরু করবেন বলে জানান তারা।
২৯ আগস্ট আন্দোলনের আগে সজল ঘোষের অপকর্ম সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। এখন শিক্ষার্থীদের মতো আমিও সজলের গ্রেপ্তার চাই। -আইএইচটি অধ্যক্ষ
জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রতিনিধিরা গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা দুপুর থেকে রাস্তা অবরোধ করে রাখায় জনদুর্ভোগ তৈরি করছে। তাদের সমস্যা নিয়ে আমি, সিভিল সার্জনের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। তিনি জানিয়েছেন পুলিশ আসামি ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এদিকে, গত ১৩ দিন ধরে সাবেক বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল ঘোষকে গ্রেপ্তারে দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সজলকে আসামি করে গত ২ সেপ্টেম্বর বগুড়া সদর থানায় মামলা করেন আইএইচটির শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন আজ পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: যাকে-তাকে দিয়ে হাত-পা টেপাতেন ছাত্রলীগ নেতা, ব্রাশও করাতেন
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত ১২ বছর ধরে সজল ঘোষ এই প্রতিষ্ঠানের হলের একটি কক্ষ দখল করে মাদক সেবনসহ শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপাল আমায়াত উল হাসিনর সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলেও দাবি করেন তারা।
মুশফিকুর রহিম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, সজল ঘোষ এখানকার কোনো শিক্ষার্থীই না। অথচ সে ২২৮ নম্বর রুমে থাকতো। সবাইকে দিয়ে হাত-পা টিপে নিতো। আমিও টিপেছি। খাওয়ার পর হাত ধুইয়ে দিতে হতো আমাদের। ব্রাশ করে দিতো ছেলেরা। কলেজ অধ্যক্ষ সব কিছু জানেন। কিন্তু তিনি আরও প্রশ্রয় দিতেন সজল ঘোষকে।
গত ১২ বছর ধরে সজল ঘোষ ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির হলের একটি কক্ষ দখল করে মাদক সেবনসহ শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। -ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ
আইএইচটি অধ্যক্ষ আমায়াত-উল-হাসিন বলেন, ২০২০ সালের জুন মাসে এখানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছি। সজল কুমার ঘোষ এরও আগে থেকে প্রতিষ্ঠানে অতিথি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। আমি যোগদানের পর তার নিয়োগ বাতিল করেছি। হোস্টেলের কক্ষ দখল করে অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানোর বিষয়ে এর আগে কেউ কখনো অভিযোগ করেননি।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, ২৯ আগস্ট আন্দোলনের আগে সজল ঘোষের অপকর্ম সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। পাঁচ সদস্যের হোস্টেল কমিটিও আগে থেকে কিছুই জানায়নি। এখন শিক্ষার্থীদের মতো আমিও সজলের গ্রেপ্তার চাই। শিক্ষার্থীরা আমার অপসারণ দাবি করছে, আমি নির্দোষ। তদন্ত কমিটি যদি মনে করে, আমি দোষী। তবে অধিদপ্তর থেকে যে শাস্তি দেবে, তা মাথা পেতে নেব।