দুই তরুণীকে বিবস্ত্র করে গ্রাম ঘোরানো, বিক্ষোভে উত্তাল মণিপুর

বিক্ষোভে উত্তাল ভারতের মণিপুর
বিক্ষোভে উত্তাল ভারতের মণিপুর  © সংগৃহীত

ভারতের মণিপুর রাজ্যে দুই নারীকে নগ্ন করে গ্রামে ঘোরানোর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা যায়, নগ্ন অবস্থায় দুই নারী গ্রামে হাঁটছেন। তাদের ঘিরে রেখেছে একদল পুরুষ। টুইটারে বুধবার (১৯ জুলাই) ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।

ভারত সরকার এ ঘটনায় বিব্রত। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে নতুন আইটি নিয়ম মেনে চলার বিষয়ে সতর্ক করেছে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তারা বলেছে, আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হতে পারে—এমন ভিডিওর প্রচার আইনের অধীনে অনুমোদিত নয়।

ভিডিওটিতে দুই নারীকে নগ্ন করে গ্রামে ঘোরানো হয় এবং তাদের শ্লীলতাহানি করতে দেখা যায়। পরে একটি মাঠে তাদের টেনে নিয়ে যেতে দেখা যায়। অভিযোগ রয়েছে, সেখানে তাদের সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ মে। মণিপুরের উপত্যকা-সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি এবং পার্বত্য-সংখ্যাগরিষ্ঠ কুকি উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার একদিন পর। তফসিলি আদিবাসীর মর্যাদা নিয়ে আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে ৩ মে থেকে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে।

জাতিগত সহিংসতায় ১২০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়ে ত্রাণশিবিরে বসবাস করছে। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর তা দেখে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলাটিকে অগ্রাধিকার দিয়ে তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং।

দোষীদের সর্বোচ্চ সাজার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি। তিনি বলেন, আমি জাতিকে আশ্বস্ত করতে চাই দোষী কাউকে রেহাই দেওয়া হবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মণিপুরের মেয়েদের সঙ্গে যা হয়েছে, তা কখনও ক্ষমা করা যাবে না।

গত মে মাসে মণিপুরের মেইতি এবং কুকি সম্প্রদায়ের মাঝে জাতিগত দাঙ্গা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১৩০ জনের প্রাণহানি এবং ৬০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ৩২ লাখ বাসিন্দার এই রাজ্যে বিশৃঙ্খলার শুরু হয়েছিল মে মাসের প্রথম দিকে।

রাজ্যের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে কুকি গ্রামবাসীদের উচ্ছেদ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলে সেখানে দফায় দফায় আন্দোলন হয়। মণিপুর রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৬৪ শতাংশ মেইতি সম্প্রদায়ের। তারপরও ওই রাজ্যের মোট ভূখণ্ডের মাত্র ১০ শতাংশের মালিকানা এই সম্প্রদায়ের সদস্যদের হাতে রয়েছে। ভারতের এই রাজ্যে তফসিলি উপজাতিদের বাইরে পাহাড়ী এলাকায় অন্য কারও জমি কেনার অনুমতি নেই।

সম্প্রতি ভারতের হাই কোর্ট মেইতি সম্প্রদায়কে তফসিলি উপজাতিদের তালিকার পাহাড়ি করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়। হাই কোর্টের এই নির্দেশের পর নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। মেইতি সম্প্রদায়ের সদস্যরা তফসিলি উপজাতিদের তালিকায় ঠাঁই পেলে রাজ্যে জমি কেনার অনুমতি পাবেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence