আ.লীগ নেতার হাত থেকে মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নিল ছাত্রলীগ

মনোনয়নপত্র ছিনতাইয়ের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন
মনোনয়নপত্র ছিনতাইয়ের শিকার আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিন  © সংগৃহীত

কুমিল্লার লালমাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রুহুল আমিন। তবে পথে ছাত্রলীগের এক নেতার নেতৃত্বে রুহুল আমিনের মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে রুহুল আমিন আর মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া একটার দিকে লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

 রুহুল আমিন চলন কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও শাহ আমানত হলের ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম নাসির উদ্দিন মির্জা। তিনি উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। নাসির আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ কামরুল হাসানের অনুসারী।

আরও পড়ুন: ফের বেপরোয়া ছাত্রলীগ, অপরাধীদের শাস্তি কেবল বহিস্কার

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল আজ। এ জন্য বেলা সোয়া একটার দিকে রুহুল আমিন মোটরসাইকেল নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরের দিকে যাচ্ছিলেন।

রুহুল আমিন অভিযোগ করেন, ইউএনওর কার্যালয়ের সামনের সড়কে পৌঁছালে নাসির উদ্দিন মির্জার নেতৃত্বে সাইফুল ইসলাম, মাসুম মিয়া, আরজু মিয়াসহ ছাত্রলীগের শতাধিক নেতা-কর্মী তাঁর মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। এরপর তাঁকে ধাক্কা দিয়ে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে সড়কের পাশের একটি দোকানে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীরা তাঁর কাছ থেকে মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেন এবং নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখান।

রুহুল আমিন বলেন, ‘নাসির উদ্দিন মির্জার নেতৃত্বে এই কাজ হয়েছে। পরে আমি সেখান থেকে চলে আসি। ওই সময় নতুন করে মনোনয়নপত্র তৈরি করাও সম্ভব নয়। তাই আর মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারিনি। ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ করে যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে কোথায় যাব? ওদের চেয়ে বড় জায়গায় ছাত্রলীগের নেতা ছিলাম। আজ আমারই এই অবস্থা।’

আরও পড়ুন : নেতা আসে নেতা যায়— খবরের শিরোনাম পাল্টায় না ছাত্রলীগের

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে নাসির উদ্দিন মির্জার মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় শুনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘নাসির আমাদের ছাত্রলীগ করেন, এটা ঠিক। শুনেছি একজনের মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে এটা কে বা কারা করেছেন, সেটা জানি না।’

এর আগে ওই ঘটনার পর রোববার দুপুরে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মঞ্জুরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, লালমাই উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হলে ওই প্রার্থী বিকেল চারটার মধ্যে তাঁর কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। 


সর্বশেষ সংবাদ