আইসিসির কাছে ফারুকের ‘নালিশ’

ফারুক আহমেদ
ফারুক আহমেদ   © সংগৃহীত

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) মনোনয়ন বাতিলের ঘটনায় মুখ খুলেছেন ফারুক আহমেদ।

একটি গণমাধ্যমকে সাবেক এই অধিনায়ক জানিয়েছেন, ‘আমি আনচ্যালেঞ্জড যেতে দেবো না। ফাইট করে যাব। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দেখব। আমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। আমি আইসিসিতে জানিয়েছি।’

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে চাউর হয়, বিসিবির শীর্ষপদে ফারুককে আর দেখতে চায় না সরকার। মূলত ফারুকের কথার সূত্র ধরেই এই আলোচনার মাত্রা ছাড়ায়। যেখানে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বিসিবি সভাপতির পদে পরিবর্তন চান বলে উল্লেখ করেন ফারুক। যদিও সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ফারুক নিজেই জানিয়েছিলেন, পদত্যাগ করছেন না তিনি।

তবে সন্ধ্যায় আরেক বিস্ফোরক তথ্য জনসম্মুখে আসে—ফারুকের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) বরাবর চিঠি দিয়েছেন বিসিবির ৮ পরিচালক। ফারুক আহমেদের ভায়রা আকরাম খান ছাড়া পরিচালনা পর্ষদের সবাই তার বিরুদ্ধে অনাস্থা জানান।

এরপরই নিশ্চিত হয়ে যায়, ফারুক আহমেদের বিদায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ঘটনাক্রমে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ জানায়, ফারুক আহমেদের বিসিবি পরিচালক পদে থাকা মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ যেভাবে তিনি পরিচালক হন, সেই প্রক্রিয়াই প্রত্যাহার করা হলো।

তবে এনএসসি যেভাবে তাকে সরিয়ে দিয়েছে, তা কার্যত মেনে নিতে পারছেন না ফারুক। তাই তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

ফারুকের ভাষ্যমতে, ‘এরই মধ্যে সেক্রেটারির মাধ্যমে আইসিসি সভাপতি জয় শাহকে পুরো ব্যাপারটি জানিয়েছি। এছাড়া আইসিসির অন্তত ৫-৭ জন পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবগত করেছি’।

ফারুক আরও দাবি করেন, ‘আমি যে অন্যায়ের শিকার, আমাকে যে জোরপূর্বক পদচ্যুত করা হয়েছে, আমি তা এরই মধ্যে আইসিসির কাছে জানিয়েছি। আমার বিশ্বাস এবং আমি নিশ্চিত আইসিসি তড়িৎ তাদের অ্যাকশন শুরু করবে। দেখবেন আগামী ২-১ দিনের মধ্যেই বিসিবিতে আইসিসির চিঠি আসবে।’

শ্রীলঙ্কার উদাহরণ টেনে ফারুক আহমেদ বলেন, দুই বছর আগে শ্রীলঙ্কায়ও এমন ঘটনা ঘটেছিল। শ্রীলঙ্কায় মন্ত্রীপরিষদ পুরো বোর্ড ভেঙে দিয়েছিল। তখন আইসিসি ত্বরিৎ পদক্ষেপ নিয়ে পুরো বোর্ডকে আবার পূনর্বহাল করেছিল।

এর আগে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে গত বছরের ৫ আগস্ট নাজমুল হাসানের বোর্ডে থাকা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) মনোনীত দুই পরিচালক জালাল ইউনুস ও আহমেদ সাজ্জাদুল আলমকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাদের পরিবর্তে সাবেক অধিনায়ক ও প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ এবং ক্রিকেট কোচ ও বিশ্লেষক নাজমূল আবেদীন ফাহিমকে এনএসসি নতুন পরিচালক হিসেবে মনোনয়ন দেয়। পরে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হন ফারুক। এর আগে, নাজমুল হাসান বোর্ড সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

কিন্তু মাত্র ৯ মাস পর হঠাৎ করে সরকারই কেন ফারুককে সভাপতির পদ থেকে সরাতে চাইছে, তা নিয়েও নানা প্রশ্ন জেগেছে। যদিও গুঞ্জন উঠেছে, নতুন সভাপতি হিসেবে এরই মধ্যে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামের কথা ভেবে রাখা হয়েছে। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩১ মে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের যে সভা হওয়ার কথা, সেটি স্থগিত হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ