রিকশায় ওড়না পেঁচিয়ে আহত
১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছায়া
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৫০ PM , আপডেট: ২১ আগস্ট ২০২৫, ০৯:৪২ AM
টানা ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেলেন যশোরের এইচএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া ছায়া (১৮)। বুধবার মধ্যরাত ১২টায় ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ছায়ার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে যশোর সদর উপজেলার দৌগাছিয়া গ্রামে। স্বজনেরা স্তব্ধ হয়ে পড়েছেন ছায়ার শোকে। স্কুল–কলেজের বন্ধু, শিক্ষক, প্রতিবেশী কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না, ছায়া আর নেই।
ছায়ার বোন মিতু জানান, গত ২৫ জুলাই (শুক্রবার) দুপুরে তিনি যশোর শহরের দড়াটানা থেকে খড়কি এলাকার বোনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন রিকশায় করে। পথে হঠাৎ বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ায় সামনের পলিথিন নিজের পায়ের নিচে গুঁজে দিতে গিয়ে নিচু হন ছায়া। সে সময় ওড়নাটি রিকশার চাকার সঙ্গে পেঁচিয়ে যায়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেটি তার গলায় ফাঁস দেয় এবং তিনি ছিটকে পড়ে যান রিকশার পাদানিতে।
ঘটনাস্থলেই নিস্তেজ হয়ে পড়েন ছায়া। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর আটদিন লাইফ সাপোর্টে থেকে মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
মিটফোর্ড হাসপাতালের ডা. ফিরোজ আহমেদ আল-আমিন বলেন, ‘দুর্ঘটনায় তার মেরুদণ্ড ছিঁড়ে যায় এবং স্পাইনাল কর্ড সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে তার স্বাভাবিক জীবনে ফেরার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার মেরুদণ্ডের হাড়গুলো সংযুক্ত করা হয়। তবে স্পাইনাল কর্ড ছিঁড়ে যাওয়ায় তা আর জোড়া লাগানো সম্ভব হয়নি। অপারেশনের পর প্রথমে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। অবস্থার অবনতি হলে ২৯ জুলাই রাত ১টার দিকে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে আর বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’