গাইবান্ধায় এনসিপির আহ্বায়ক হলেন জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা

এক জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন খাদেমুল ইসলাম খুদি। পাশে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু
এক জনসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন খাদেমুল ইসলাম খুদি। পাশে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু  © সংগৃহীত

গাইবান্ধা জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নতুন জেলা কমিটি ঘোষণা করে তীব্র সমালোচনা ও অভ্যন্তরীণ সংঘাতের সৃষ্টি করেছে। জাসদের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম খুদিকে ৫২ সদস্যের এ কমিটির আহ্বায়ক করার সিদ্ধান্তে দলীয় কর্মী, সহযোগী সংগঠন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক বিতর্ক ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।

গত বুধবার এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের স্বাক্ষরিত ঘোষণায় খাদেমুল ইসলাম খুদিকে আহ্বায়ক করা হয়। এই ঘোষণার পর থেকেই জেলাজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তপ্ত বিতর্কের সূত্রপাত হয়।

খুদির রাজনৈতিক অতীত ও বর্তমান ভূমিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিভিন্ন বক্তব্য, বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে তার মন্তব্যের ভিডিও পুনঃপ্রচার করে খুদিকে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এনসিপির নেতাকর্মী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা প্রশ্ন তুলছেন, যারা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করেছেন, তারা কীভাবে জুলাই আন্দোলনের আদর্শে গঠিত এনসিপির নেতৃত্বে আসে?

খুদির রাজনৈতিক কার্যক্রম সম্পর্কে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের অক্টোবরে সাদুল্ল্যাপুর উপজেলায় সুধী সমাবেশের নামে একটি গোপন রাজনৈতিক বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা করেন তিনি। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারলে বৈঠক শুরুর আগেই তিনি ব্যানার সরিয়ে প্রস্থান করেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকার পরিবর্তনের পর বিভিন্ন সময়ে তিনি কৌশলগত দলবদলের চেষ্টা চালিয়েছেন।

এই নিয়োগের প্রতিবাদে এনসিপির জেলা কার্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা গত বৃহস্পতিবার রাতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। কার্যালয় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তালাবদ্ধ ছিল এবং কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি।

জেলা কমিটির কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব এসএম মনিরুজ্জামান সবুজ নীতির প্রশ্নে পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগপত্রে উল্লেখ রয়েছে, নীতি ও আদর্শ বিসর্জন দিয়ে স্বৈরাচারের দোসরকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, যা জুলাই আন্দোলনে শহীদদের সঙ্গে বেঈমানি।

গাইবান্ধা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব বায়োজিদ বোস্তামী জীম দাবি করেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগপন্থি প্রভাবশালী মহলের দোসর, সুবিধাবাদী চরিত্র ও সয়াবিন রাজনীতির প্রতিনিধি বিতর্কিত ব্যক্তিদেকে পদ দেওয়া হয়েছে। এতে এনসিপির ত্যাগী ও প্রকৃত কর্মীদের সরাসরি অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। তিনি জেলার আহ্বায়ক কমিটি দ্রুত বিলুপ্তির দাবি জানান।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম কে এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।


সর্বশেষ সংবাদ