২১ দিন পর ব্যবসায়ী হত্যার ক্লু উদ্ধার, গ্রেপ্তার মাদ্রাসাছাত্র
- ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:২৪ PM
ঝিনাইদহে ব্যবসায়ী তোয়াজ উদ্দীন (৫৩) হত্যা মামলার ২১ দিন পর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তানভীর হাসান (১৮) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রকে। তানভীর যশোর কোতোয়ালি থানার কামারগন্যা গ্রামের আবুল কালাম আজাদের ছেলে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশ। এর আগে সোমবার দুপুরে খুলনার বটিয়াঘাটা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তানভীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানায়, ২০২২ সাল থেকে তোয়াজ উদ্দীনের সঙ্গে তানভীরের পরিচয় গড়ে ওঠে। স্ত্রী না থাকায় তোয়াজের সঙ্গে তানভীরের সমকামিতার সম্পর্ক তৈরি হয়। সে সূত্রে তানভীর ঢাকায় তোয়াজের বাসা এবং গ্রামের বাড়িতে যাতায়াত করত।
গত ১ সেপ্টেম্বর, তোয়াজ তানভীরকে নিয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে যান। ওই রাতে জোরপূর্বক বলাৎকারের শিকার হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তানভীর গভীর রাতে ঘরের ভেতরে থাকা পাথরের শীল দিয়ে ঘুমন্ত তোয়াজের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করে।
খুনের পর তানভীর তোয়াজের পা বেঁধে তার মোবাইল ফোন নিয়ে যায় এবং ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। চাবিটি পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। যাওয়ার সময় দেয়ালে একটি চিরকুট লিখে রেখে যায়, যেখানে লেখা ছিল—
‘তাকে মারার কারণ সে মুহাম্মাদ (স.) কে গালি দিসে, তাঁর নামে খারাপ কথা বলেছে। আল্লাহু আকবার।’
৩ সেপ্টেম্বর ঘর থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে লাশ উদ্ধার হয়।
কেশবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খুরশিদ মিয়া বলেন, ‘তোয়াজ যখন গ্রামে আসতেন, তখন তার বাসায় মাদ্রাসার ছাত্ররা যাতায়াত করত। আমরা ধারণা করতাম, তিনি ওদের আর্থিক সহায়তা করেন। কিন্তু তিনি সমকামী ছিলেন, এটা কেউ জানত না। তানভীর গ্রেপ্তার হওয়ার পর হত্যার আসল কারণ পরিষ্কার হলো।’
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডটি প্রথমে মোটিভবিহীন ও ক্লুলেস ছিল। নিহত তোয়াজ উদ্দীনের ভাই আক্কাস আলী বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর ডিবি পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল সার্বক্ষণিক মনোযোগ দিয়ে তদন্ত চালায়।’