১ বছর সরকারিভাবে সরবরাহ নেই অ্যান্টিভেনম, এক সপ্তাহে সাপের কামড়ে দু’জনের মৃত্যু
- যশোর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০০ AM
যশোরে সাপের কামড়ে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত একসপ্তাহের ব্যবধানে দুই জন রোগী মারা গেছেন। চলতি বছরের গত ৮ মাসে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৩৭ জন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে এক বছরের বেশি সময় জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে সরকারিভাবে সরবারহ নেই অ্যান্টিভেনম বা সাপের বিষের প্রতিষেধক।
সর্বশেষ শুক্রবার সাপের কামড়ে মোসাম্মদ তামান্না (২০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এদিন ভোররাতে সদর উপজেলার ডাঙ্গাবয়রা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। মৃত তামান্না ওই গ্রামের জুয়েল রানার স্ত্রী।
জুয়েল রানা জানান, তামান্না নিজ ঘরের মেঝেতে ঘুমিয়েছিলেন। ভোররাতে একটি বিষাক্ত সাপ তার বাম হাতের আঙুলে কামড় দেয়। তীব্র যন্ত্রণার কারণে প্রথমে তাকে স্থানীয় এক ওঝার কাছে নেয়া হয়। তবে অবস্থার অবনতি ঘটায় সকাল ৯টার দিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট মণিরামপুর বিজয়রামপুরে দুই শিশুকে সাপের দংশনের ঘটনা ঘটে। এর পর স্বজনেরা তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কিন্তু সেখানে সাপের বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম না থাকায় রোগীদের হাসপাতাল থেকে ফেরত দেয়া হয়। এরপর পরিবারের লোকজন আহত দুই শিশুকে পাশের পেয়ারাতলা গ্রামে নিয়ে সাপের বিষ নামানোর জন্য ওঝা (কবিরাজ) দিয়ে ঝাড়ফুঁক শুরু করায়। কাজ না হলে পরে চালকিডাঙ্গা গ্রামের আরেক ওঝার কাছে নেওয়া হয়। চালকিডাঙ্গার ওঝার কাছে ঝাড়ফুঁক দেওয়ার সময় শিশু আজিমের মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ের যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাসুদ রানা বলেন, দিন দিন সাপে কামড়ানো রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছরের শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ৩৭ জন। তবে এমন পরিস্থিতির মধ্যে এক বছরের বেশি সময় জেনারেল হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে সরকারিভাবে সরবারহ নেই অ্যান্টিভেনম বা সাপের বিষের প্রতিষেধক। হাসপাতালগুলোতে রোগী আসলে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় হাসপাতাল ফার্ন্ডের টাকায় বাইরে থেকে অ্যান্টিভেনম কিনে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত এন্টিভেনাম না থাকাতে সাপে দংশনের পর স্থানীয়রা ছুটছেন ওঝাদের কাছে। এতে সময় ক্ষেপণের কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন সাপে কাটা রোগী। গত এক সপ্তাহে দুই জনের মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে।