রাজশাহীতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন পাইলট তৌকির
- রাজশাহী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৫, ০৯:১৯ PM , আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:২০ PM
রাজধানী ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলামকে রাজশাহীতে দাফন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে নগরের সপুরা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে তার মরদেহ রাজশাহীতে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে প্রথমে মরদেহ উপশহর এলাকার পারিবারিক বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা তাকে শেষ বিদায় জানান। পরে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে রাজশাহী জেলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার পর বিকেল ৫টায় সপুরা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তৌকির ২০১০ সালে সপ্তম শ্রেণিতে পাবনা ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন। ২০১৬ সালে তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন। তৌকিরের স্ত্রী নিঝুম ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাবা তহুরুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী এবং মা সালেহা খাতুন গৃহিণী। তার একমাত্র বোন তাসনিয়া ইসলাম সৃষ্টি রাজশাহীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ছাত্রী।
আরও পড়ুন: ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থেকে বের হলেন দুই উপদেষ্টা ও প্রেস সচিব
তার দাদা, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আজিজুর রহমান গভীর শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার নাতি খুব ভালো ছেলে ছিল। মাত্র কিছুদিন আগে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়েছিল। তারা নতুন জীবন শুরু করেছিল। কিন্তু এখন আমার নাতবউ একা হয়ে গেল। এটা ছিল সাগরের প্রথম একক উড্ডয়ন। আমরা খুব খুশি ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে গেল। সব শেষ হয়ে গেল।’
সাগরের চাচা সাদিকুল ইসলাম বলেন, ‘তৌকির আমাদের পরিবার এবং এলাকার সবার কাছে খুব প্রিয় ছিল। সে সবসময় সবাইকে সম্মান করত। তাঁর মতো একজন মানুষকে হারানোর বেদনা আমাদের চিরকাল তাড়িয়ে বেড়াবে।’
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ৩৫ স্কোয়াড্রন, ৭৬ বিএএফএ কোর্সের ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরকে উদ্ধার করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জানা গেছে, তৌকির তার ক্যাডেট জীবনে পিটি-৬ বিমানে প্রথম ১০০ ঘণ্টা উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছিলেন। পরে তিনি ১৫তম স্কোয়াড্রনে প্রায় ৬০ ঘণ্টা উড্ডয়ন করেন এবং তারপর ৩৫তম স্কোয়াড্রনে যোগ দেন।