এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে সাপে কামড়

অ্যান্টিভেনম দিতে যাচ্ছিলেন ডাক্তার, জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে ওঝার কাছে গেল পরিবার, অতঃপর...

অপু
অপু  © সংগৃহীত

অসচেতনতা ও কুসংস্কারের বলি হয়ে অকালেই ঝরে গেল একটি সম্ভাবনাময় প্রাণ। শনিবার (১২ জুলাই) বিষাক্ত সাপের কামড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপা সিটি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী অপু (১৯)। শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অপু শৈলকুপা উপজেলার সারুটিয়া ইউনিয়নের ব্রহ্মপুর গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এদিন ভোর ৪টার দিকে অপুকে একটি বিষধর সাপ দংশন করে। অসুস্থ বোধ করলে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে অপুকে নিয়ে যান স্থানীয় এক ওঝার কাছে। সেখানে ঝাড়ফুঁকের পর অপুকে বাড়িতে ফিরিয়ে বিশ্রামের জন্য রাখা হয়।

কিন্তু কিছু সময় পর তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। তখন তাকে শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা যখন অ্যান্টিভেনম দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তে রোগীর স্বজনরা তাকে জোরপূর্বক হাসপাতাল থেকে ঋষিপাড়ার আরেক ওঝা—চিত্ত সাপুড়িয়ার বাড়িতে নিয়ে যান।

ওঝা অবশ্য আধুনিক চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিলেও স্বজনরা তার কথায় কর্ণপাত না করে কবিরাজি চিকিৎসাতেই আস্থা রাখেন। এক পর্যায়ে অপুর অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে তাকে পুনরায় শৈলকুপা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হলেও, পথেই বা পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পর অপু শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।

অপুর এই মৃত্যু শুধুই একটি দুর্ঘটনা নয়—এটি আমাদের সমাজে বিদ্যমান কুসংস্কার, অজ্ঞতা এবং অমানবিক অবহেলার করুণ পরিণতি। যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হতো, হয়তো আজ অপু আমাদের মাঝে বেঁচে থাকত।


সর্বশেষ সংবাদ