আশুলিয়ায় চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর অবস্থানে পুলিশ, স্বস্তিতে ব্যবসায়ীরা

বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে মাইকিং করছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর কবীর
বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে মাইকিং করছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর কবীর  © টিডিসি

পুলিশের কঠোর অবস্থান নেওয়ার কারণে দীর্ঘদিনের চাঁদাবাজির অভিশাপ থেকে অবশেষে মুক্তি পেয়েছেন বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পুলিশের রীতিমতো ‘যুদ্ধ ঘোষণায়’ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও কাউন্টারগুলোয় ফিরিয়ে এসেছে স্বাভাবিক গতি, যা সাধারণ ব্যবসায়ী ও কাউন্টার মালিকদের মধ্যে স্বস্তি এনে দিয়েছে। পুলিশের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।

চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আশুলিয়ার বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিনুর কবীরের একটি মাইকিং এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরি করে ইতিমধ্যেই অভিযান শুরু হয়েছে। পরিবহন কাউন্টার, দোকান ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করা হচ্ছে এবং চাঁদা না দিতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

বাইপাইলের একাধিক কাউন্টার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রতিদিন চাঁদা দিতে দিতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল। প্রতিবাদ করলেই মারধর, ভাঙচুর—সবই সইতে হতো। এখন পুলিশ পাশে দাঁড়ানোয় আমরা আশাবাদী।’

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও জানান, মাসিক ভিত্তিতে নির্দিষ্ট অঙ্কের চাঁদা দিতে হতো। দিতে অস্বীকার করলেই দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতো চাঁদাবাজ চক্র। তারা বলেন, আগে অভিযোগ করেও কোনো সুরাহা হতো না। এবার পুলিশ নিজে এসে ব্যবস্থা নিচ্ছে, এটা ইতিবাচক।

আরও পড়ুন: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষককে চাকরি থেকে অপসারণ

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (অপারেশন) সফিকুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ব্যবসায়ীরা যাতে নিরাপদে ব্যবসা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবীর বলেন, ‘আমরা ৫ আগস্টের আগের পুলিশ না, আমরা নতুন প্রজন্মের পুলিশ। মানুষকে নিরাপত্তা দিতে যা করার দরকার আমরা করবো। চাঁদাবাজি ও অবৈধ কার্যকলাপকে কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।’

বাইপাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকাটি রাজধানী ঢাকার প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত। অথচ দীর্ঘদিন ধরে একটি চাঁদাবাজ চক্র এখানকার পরিবহন কাউন্টার, হোটেল, দোকান ও হকারদের জিম্মি করে রেখেছিল। পুলিশের এ উদ্যোগে সাধারণ মানুষ যেমন আশাবাদী, তেমনি ব্যবসায়ীরা পেয়েছেন নতুন করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ।


সর্বশেষ সংবাদ