প্রকাশিত হলো কাদের মির্জার আত্মজীবনী ‘সত্য যে বড় কঠিন’

কাদের মির্জা
কাদের মির্জা  © টিডিসি ফটো

অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে আলোচিত-সমালোচিত আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত বসুরহাট পৌরসভায় মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার আত্মজীবনী ‘সত্য যে বড় কঠিন’। বিভিন্ন সময়ে নিজ দলের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সরকারী প্রশাসনের সমালোচনা করে দেশব্যাপী আলোচনার জন্ম দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ছোটো ভাই কাদের মির্জা।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রূপ-নারানের কুলে’ কবিতার একটি লাইন ‘সত্য যে কঠিন’ এর অনুকরণে নিজের আত্মজীবনীর নামকরণ করেছেন কাদের মির্জা।

আরও পড়ুন: বিয়ের আগেই শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ ঢাবি ছাত্রীর

বইটির প্রাক কথনে তিনি লিখেছেন, ‘শিক্ষা হলো জীবন ব্যাপী প্রক্রিয়া, জীবনের শিক্ষা সিলেবাসে বন্ধি থাকে না। ’ নিজের ৪৮ বছরের রাজনৈতিক জীবনে পাওয়া শিক্ষা আর অভিজ্ঞতার কথা আত্মজীবনীতে তুলে ধরেছেন কাদের মির্জা। অবহেলিত দলীয় কর্মীদের মিথ্যা মামলার বোঝা নিয়ে মাসের পর মাস জেলের ঘানি টানা, টাকা পয়সার অভাবে ছোট্ট কন্যা শিশুর দুধ কিনতে না পারা, স্ত্রী, সন্তানদের সময় দিতে না পারা এমন নানা হাহাকারের কথা ওঠে এসেছে বইটিতে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক বাবাকে নিয়ে বইটি শুরু হয়েছে। তার পিতা বঙ্গবন্ধুর সাথে কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে পড়ালেখা করেছেন। বেকার হোস্টেলে পাশাপাশি কক্ষে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু পরিবারকে রাজাকার বাহিনীর অত্যাচার থেকে রক্ষা করেছেন। দুইভাই মুক্তিযোদ্ধা। এর মধ্যে ওবায়দুল কাদের ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। তবে তার জ্যাঠা (চাচা) এরফান মিয়া রাজাকার ছিলেন। যাকে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে তার ভাই হত্যা করেছে বলে তিনি লিখেছেন। তার পিতাকে নিয়ে রাজনীতি ও মিথ্যাচারের বিচার কার কাছে দেবেন সেই প্রশ্ন রেখেছেন, (পৃষ্ঠা : ১৪)।

বইটিতে স্বাধীনতার আগের ও পরের বাংলাদেশের গ্রামীন জীবনের বর্ণনা। গরুর গাড়িতে চেপে মায়ের সাথে নানা বাড়ি যাওয়া, লুঙ্গি পরে, স্যাল্ডেল ছাড়া, হাতে বই নিয়ে কলেজ করা, ১/২টি শার্ট দিয়েই বছরের পর বছর পার করে দেয়া, মেলা, জারি গান, সারি গান, পালা গানের চাক্ষুষ বর্ণনা আছে। যার সব কিছু এখন হারিয়ে গেছে। লুঙ্গি পরে কলেজ করা এখনকার ছেলে মেয়েরা কল্পনাও করতে পারে না। সন্ধ্যার পরপরই গ্রামের মানুষ ঘুমিয়ে পড়তে, কুপি বাতি জ্বালানোর পয়সা ছিলো না। এসব কিছুর বর্ণনা আছে।

আত্মজীবনীতে স্বাভাবিকভাবেই এসেছে নিজ জীবনের প্রেম, বিয়ে এবং সন্তানদের কথা। বড় ভাই ওয়বাদুল কাদেরের কথায় নিজে পাত্রী না দেখেই বিয়ে করেন মির্জা কাদের। এমনকি তাঁর স্ত্রী আখতার জাহান বকুলও তাকে দেখেননি। নানা চাড়াই উৎরাই পেরিয়ে তাদের সংসার। বারবার জেলে গেছেন। একদিনের মেয়ে ফার্সাকে হাসোতাল থেকে ঘরে আনতে পারেননি, মিথ্যা মামলায় জেলে নিয়ে গেছে পুলিশ।

পৌর মেয়র হিসেবে কিভাবে মানুষের জন্য কাজ করেছেন সেই বর্ণনা দিয়েছেন। বইটিতে ১/১১ সরকারের সময়ে তৃণমূলের কোনো কোনো নেতার কিংস পার্টিতে যোগ দেয়ার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। একই সাথে ভ্রমনের গল্পও পাওয়া যাবে আত্মজীবনীতে। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব এবং আমিরিকা ভ্রমণের বর্ণনা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: পুতিনের মৃত্যু কামনার সুযোগ দিচ্ছে ফেসবুক

সত্য বচন: শেষ দিকে আবার কিছু জ্বালাময়ী অপ্রিয় সত্য কথা লিখেছেন আবদুল মির্জা কাদের। জমির রেজিস্ট্রি ও নামজারিতে দুর্নীতি, চিকিৎসক ও শিক্ষকদের দুর্ণীতি। রাজনীতিবিদ ও আমলাদের দুর্ণীতি। তিনি মনে করেন, রাজনীতিবিদের দুর্ণীতি নিয়ে কথা হয় কিন্তু আমলা থেকে যায় ধরা ছোয়ার বাইরে। দুর্নীতি ও ঘুষের কারণে বাজেটের ৫০ শতাংশ কাজও হয় না। ১০ টাকা বাজেট হলে, গ্রামে যেতে ১ টাকা হয়ে যায়। (পৃষ্টাঃ ১৮৮)। তার ভাষায়, ‘আমলারাই রাজনীতিবিদের দুর্নীতি শেখায়। সরকার পরিবর্তন হলে সচিবরা খোলস পাল্টে সরকারের খাস লোক বনে যায়।’ (পৃষ্টাঃ ১৯২)। বক্তব্যর ঢং এ লিখে গেছেন আত্মজীবনী।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence