কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান?
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জনসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। উর্বর জমি কমে গেলেও কমেনি ফসলের উৎপাদন। জনসংখ্যার এই বিস্ফোরণের এতটুকু প্রভাব পড়েনি খাদ্য উৎপাদনের ওপর। অভুক্ত থাকতে হয় না বর্ধিত জনগোষ্ঠীর কাউকে। বরং খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে কৃষিবিদ ও কৃষকদের কল্যাণে। সনাতন কৃষি ব্যবস্থার আধুনিকায়নে এবং বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদের মাধ্যমে টেকসই কৃষি উন্নয়নের লক্ষ্যে কৃষিবিদ তৈরি করে যাচ্ছে বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
তাদের গবেষণার অবদানে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত। প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারেও কৃষিবিদদের সুযোগ অনেক বিস্তৃত। কৃষিতে পড়াশোনা করে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিসহ রয়েছে দেশের বাইরে কৃষি নিয়ে কাজ করার অপার সুযোগ। কৃষিক্ষেত্রে অবদান রাখতে কৃষিবিদ হতে পারেন আপনিও। বাংলাদেশে কৃষি নিয়ে পড়ার বিষয়ে জানাচ্ছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের শেকৃবি প্রতিনিধি আরাফাত রহমান অভি।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি):
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি, ভেটেরিনারি, পশুপালন, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান, ফিশারিজ এবং কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদে মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ২৩০টি। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১০ নভেম্বর। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ফরম উঠাতে এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে চতুর্থ বিষয় ব্যতীত মোট জিপিএ ৯ থাকতে হবে। পদার্থবিদ্যায় ২৫ নম্বর, রসায়নে ২৫ নম্বর , গণিতে ২৫ নম্বর ও জীব বিজ্ঞানে ২৫ নম্বর মিলে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (admission.bau.edu.bd) ভর্তি সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়া যাবে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি):
বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি, এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট, এনিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন ও ফিসারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার অনুষদে মোট আসন সংখ্যা ৬২০ টি। চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৭ ডিসেম্বর। এসএসসি ও এইচএসসি সমষ্টিগতভাবে জিপিএ ৭ থাকলেই আবেদন করতে পারবেন। পদার্থে ২০ নম্বর , রসায়নে ২০ নম্বর , জীববিজ্ঞানে ২০ নম্বর , গণিতে ২০ নম্বর , ইংরেজিতে ১০ নম্বর ,সাধারণ জ্ঞানে ১০ নম্বর মিলে মোট ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। ভর্তির সব তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (sau.edu.bd) পাওয়া যাবে।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি):
বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি,ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স, ফিশারিজ, কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায়শিক্ষা, কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি এবং বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে মোট আসন সংখ্যা ৩৯৩ টি। চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৩ নভেম্বর। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় চতুর্থ বিষয় বাদে সমষ্টিগতভাবে জিপিএ ৬.৫০ ও আলাদাভাবে ৩ থাকলেই আবেদন করতে পারবেন। পদার্থবিদ্যায় ২০ নম্বর, রসায়নে ২০ নম্বর, গণিতে ২০ নম্বর, জীববিজ্ঞানে ৩০ নম্বর ও ইংরেজিতে ১০ নম্বর মিলে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে পরীক্ষা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (sau.ac.bd) ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি)
বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদে মোট আসন সংখ্যা ৩১০টি। কৃষি, ফিশারিজ, ভেটেরিনারি মেডিসিন অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স ও কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ উন্নয়ন অনুষদে ভর্তির জন্য এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মোট জিপিএ ৭.৫০ ও আলাদাভাবে ৩.৫০ থাকতে হবে। পদার্থবিদ্যায় ২০, রসায়নে ২০, জীববিজ্ঞানে ২০, গণিতে ১৫, ইংরেজিতে ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞানে ১০ মিলে ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হয়। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৫ নভেম্বর। ভর্তির সব তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (bsmrau.edu.bd/admission) পাওয়া যাবে।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়:
ভেটেরিনারি মেডিসিন, ফুডসায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ও মাৎস বিজ্ঞান অনুষদে ২৪৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। চলতি বছর ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৪ নভেম্বর। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় মোট জিপিএ ৭ এবং আলাদাভাবে জিপিএ ৩ থাকতে হবে। পদার্থবিদ্যায় ২০ নম্বর, রসায়নে ২০ নম্বর, গণিতে ২০ নম্বর, জীববিজ্ঞানে ৩০ নম্বর ও ইংরেজিতে ১০ নম্বর মিলে মোট ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (cvasu.ac.bd) ভর্তি সংক্রান্ত সব তথ্য পাওয়া যাবে।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়:
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ইউনিটের ‘ক’ ইউনিটে কৃষি, মাৎস্য বিজ্ঞান, এনিমেল সায়েন্স, ভেটেরিনারি মেডিসিন বিষয়ে পড়ানো হয়। পদার্থবিদ্যায় ২০ নম্বর, রসায়নে ২০ নম্বর, জীববিজ্ঞানে ২০ নম্বর, গণিতে ১৫ নম্বর, ইংরেজিতে ১৫ নম্বর ও সাধারণজ্ঞানে ১০ নম্বর মিলে মোট ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (pstu.ac.bd) ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে।
হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি ইউনিটের ‘এ’ ও ‘ডি’ ইউনিটের চারটি অনুষদে কৃষি বিষয়ে পড়ানো হয়। ‘এ’ ইউনিটে কৃষি, ভেটেরিনারি, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান ও মাৎস বিজ্ঞান অনুষদ এবং ‘ডি’ ইউনিটের কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদের বিএসসি ইন এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিএসসি ইন ফুড প্রসেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে (hstu.ac.bd) ভর্তি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে।
এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে কৃষি বিষয়ে পড়ার সুযোগ।