শেষ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছুদের যে পরামর্শ দিলেন ঢাবি শিক্ষার্থী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৯ PM , আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৮ PM
দরজায় কড়া নাড়ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা। ইতিমধ্যে ভর্তিচ্ছুদের সকল প্রস্তুতি সমাপ্তির পথে। শেষ সময়ে সবকিছু গুছিয়ে কীভাবে পরীক্ষা শেষ করা যেতে পারে এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ঢাবির ২৩-২৪ সেশনে ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করা শায়রা মাশিয়াত।
১. ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণকালে সাধারণত কোন ভুলগুলো শিক্ষার্থীদের পিছিয়ে দেয়?
প্রস্তুতি নেওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বড় যে ভুল করে তা হলো একই সময়ে অনেকগুলো বইয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমি বলবো একাধিক বইয়ে ধাবিত না হয়ে যে কোনো একটি বই ভালো করে পড়া। সব বইয়ের তথ্যই মোটামুটি এক। তবে যে বইটি নির্বাচন করবো পড়ার জন্য সেটা খুব ভালোভাবে লেখা একটি বই হতে হবে। বর্তমান এই সময়টা আগের সব পড়া রিভিশনে ব্যয় করতে হবে। অনেকে এমনও হয় যে এতোদিন বেগতিক ছিলো কিন্তু শেষ সময়ে এসে ঠিক করেছে কোন ইউনিটে পরীক্ষা দেবে।
২. পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত বলে মনে করেন?
পরীক্ষার দেড় ঘণ্টা সময়টা অনেকখানি পরীক্ষকের ওপর নির্ভর করে। কোনো কেন্দ্রে দেখা যায় এমসিকিউ এবং লিখিত প্রশ্ন একসঙ্গে দেওয়া হয় আবার কোথাও নির্দিষ্ট সময় পর। এভাবে আমার মনে হয় অনেক বৈষম্য হয়; তাই বলবো দুইটা প্রশ্নই যেন একইসাথে দেওয়া হয়। কারণ এর অন্যতম একটি সুবিধা হলো এমসিকিউ দেওয়া শেষ করে সাথে সাথে লিখিত অংশ শুরু করা যায় ফলে সময় একটু বেশি পাওয়া যায়। লিখিত অংশে তারা প্রশ্ন যে খুব কঠিন করে তা নয় বরং এমন প্রশ্ন করে যে আমি সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারছি কি না তা বোঝা যায়। দেড় ঘণ্টা সময় হিসেবে এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।
৩. বহুনির্বাচনীতে যেহেতু নেগেটিভ মার্কস থাকে কোনো প্রশ্নের উত্তর না জানলে কি সেটি উত্তর করা উচিত হবে?
টিচাররা সাধারণত বলে দেয় তুমি যখন একটি নির্দিষ্ট নাম্বার এনশিওর করবে এরপর আর দাগানোর দরকার নেই। আমি বলবো যদি কোনো প্রশ্ন আপনার একেবারেই অপরিচিত মনে হয় তাহলে সেটি উত্তর করার দরকার নেই। যদি কোনো প্রশ্ন মনে হয় এর অর্ধেক উত্তর আপনার জানা বাকি অপশনের বিষয়ে নিশ্চিত না তবে দাগানো যেতে পারে।
৪. লিখিত অংশে সময়ের মধ্যে কীভাবে সব প্রশ্নের ভালোভাবে উত্তর দেওয়া সম্ভব হবে?
আমার বহুনির্বাচনী অংশ দশ মিনিট আগে শেষ হয়ে গিয়েছিলো তাই লিখিত অংশের জন্য একটু বেশি সময় পেয়েছিলাম যা অনেক বড় একটি সুবিধা এনে দিয়েছিলো। ফলে আমি সময়ের মধ্যেই লিখে শেষ করতে পারি।
৫. আপনি কি একাধিক ইউনিটের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন? যদি নিয়ে থাকেন তাহলে কীভাবে নিয়েছেন?
আমি একাধিক ইউনিটের প্রিপারেশন নেইনি তবে বলবো যে কোনো একটা ইউনিটের প্রিপারেশন নিতে এবং ভালোভাবে নিতে। কারণ হিসেবে বলবো, আমি যখন আমার শতভাগ সময় এবং চেষ্টা এক জায়গায় দিচ্ছি তখন ভালো ফলাফল আসবেই। যখন দুই নৌকায় পা দিচ্ছি একটু সমস্যা হতে পারে বা চান্স যদি হয়েও যায় পছন্দের বিষয় না-ও আসতে পারে। একাধিক ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারে তবে ভালো করে যে কোনো একটি ইউনিটের প্রস্তুতি নেওয়াই ভালো। আমি নিজে একটা ইউনিটের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম এবং সে প্রস্তুতি দিয়ে যত জায়গায় পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব দিয়েছি।
৬. পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি পরীক্ষায় ভীষণ প্রতিযোগিতা। অনেকে মানসিকভাবে প্রতিযোগিতা ভয় পায়। মানসিকভাবে হতাশ হয়ে যায়। নিজেকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করার উপায় কী মনে করেন?
মানসিক চাপের বিষয়ে বলবো, ফলাফল অনেকাংশেই অনিশ্চিত। এখন কোচিংয়ের বা বিভিন্ন পরীক্ষায় ভালো করছে মানে যে ভর্তি পরীক্ষায়ও ভালো করবে ব্যাপারটা মোটেও তা নয়। তাই আমি বলবো কে কী করছে সেটা না দেখ এক মনে নিজের প্রস্তুতি নিজে নেওয়া।
৭. প্রচুর পড়াশোনা করার পরও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কারও চান্স না হয়, তার জন্য আপনার কী পরামর্শ থাকবে?
বিকল্পের তো অভাব নেই, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশে এখন অনেক ভালো ভালো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এখন সাময়িক সময়ের জন্য হয়তো কষ্ট লাগতে পারে তবে সময়ের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যায়।