মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার দিনই হেফাজতের বিক্ষোভ, শঙ্কায় ভর্তিচ্ছু ও অভিভাবকেরা

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা  © ফাইল ফটো

দেশে হঠাৎ লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার৷ চলতি মাসের ৩০ মার্চ স্কুল-কলেজগুলো খোলার কথা থাকলেও করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় স্কুল-কলেজের ছুটি বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখও করোনার ঊর্ধ্বগতির ফলে পেছানো হয়েছে। এদিকে ২৬ শে মার্চ থেকে দেশে বইছে রাজনৈতিক উত্তাপ।

আবার ৪০তম বিসিএস এর মৌখিক পরীক্ষাসহ পিছিয়ে গেছে বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা।শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় সবকিছু পিছিয়ে গেলেও পেছানো হয়নি মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা। করোনার ঊর্ধ্বগতির ভেতরই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আগামী ২ এপ্রিল মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্তে অনড় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু সরেজমিনে কতটা রক্ষা করা হবে স্বাস্থ্যবিধি ? তাই নিয়ে শঙ্কা ও দুশ্চিন্তায় মেডিকেল ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা।

মেঘা খান নামে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার্থী বলেন, আমার বাসা কুমিল্লায়। কিন্তু আমাদের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে ঢাকায়। আমার মতো হাজারো পরীক্ষার্থীকে নিজ বিভাগের বাইরে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে৷ এক্ষেত্রে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।

মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান নামে এক মেডিকেল পরীক্ষার্থী বলেন, আমার বাসা পঞ্চগড়। আমার মেডিকেল পরীক্ষার কেন্দ্র ঢাকা সরকারি তিতুমীর কলেজ। কিন্তু দেশের চলম রাজনৈতিক উত্তেজনা ও করোনার ঊর্ধ্বগতির ফলে পরিবার কর্তৃক বাড়ি থেকে ঢাকা যাওয়ার অনুমতি মিলছে না। সব কিছু মিলিয়ে একটা এলোমেলো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি ও করোনার ঊর্ধ্বগতির ভেতর শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তার বিষয়টি আমলে নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পুনর্বিবেচনা করা।

চট্টগ্রাম থেকে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার্থী শাফিন বলেন, আসলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমন সিদ্ধান্তে আমি হতাশ। বারবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা বললেও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৪১ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় দেখে গেছে কতটা স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও পত্র-পত্রিকায় প্রচার করা সংবাদে দেখা যায় বেশিরভাগ কেন্দ্র গুলোতে উপেক্ষিত ছিলো স্বাস্থ্যবিধি।তাই মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে ও স্বাস্থ্যবিধি শুধু নাম মাত্র বলা যায়।

এ প্রসঙ্গে কয়েকজন অভিভাবক বলেন, দেশের এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে ছেলে-মেয়েরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে। এছাড়া বর্তমান করোনার ঊর্ধ্বগতির সাথে দেশে রাজনৈতিক সংঘাতে সংঘর্ষ-অগ্নিসংযোগ, মৃত্যুর ঘটনা, যানবাহন সংকট ও তীব্র যানযট শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে শঙ্কা তৈরি করছে।

তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে না ফেলে পরীক্ষার তারিখটি পুনর্বিবেচনা করা।

এদিকে ২৬ শে মার্চ থেকে দেশে বইছে রাজনৈতিক উত্তাপ।এখন ও কাটেনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার রেশ। আগামী ২ এপ্রিল (শুক্রবার) মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার পূর্বঘোষিত তারিখেও সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। উর্ধ্বগামী করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের ১৮ দফা  নির্দেশনা জারি করা হলেও ২ এপ্রিল মেডিকেল পরীক্ষা আয়োজন করতে প্রস্তুত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পূর্ব বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মেডিকেল পরীক্ষা পেছানোর এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ২ এপ্রিল রেকর্ড সংখ্যক ১ লাখ ২২ হাজার ৮৮৪ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ