রুয়েট কুয়েট ও চুয়েটের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত আজ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) ছাড়াই গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েট। ফলে এ তিন বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে দুই ধাপে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার জন্য বুয়েট যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তা আলোর মুখ দেখছে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। বুয়েটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ছাড়াও তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রস্তাবটি দিয়েছিল বুয়েট কর্তৃপক্ষ।

তবে সম-অংশীদারিত্ব না থাকায় চুয়েট, কুয়েট ও রুয়েট কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেবে বলে সূত্র জানিয়েছে। সে জন্য করণীয় ঠিক করতে আজ মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকায় এক সভায় মিলিত হয়েছেন তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা। ভর্তি পরীক্ষার জন্য বেশি সময় না থাকায় এ সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে বুয়েট গুচ্ছে আসতে চাইলে পরবর্তীতে ফের এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম শেখ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বুয়েট যে প্রস্তাব দিয়েছে তাতে তারাই নেতৃত্ব দিতে চায়। কিন্তু আমরা চাই, চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় মিলে সম-অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরীক্ষা হোক। এ বিষয়ে ইউজিসিকেও চিঠি দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে ভর্তি পরীক্ষার জন্য বেশি সময় নেই। সেক্ষেত্রে আজ ঢাকায় আমাদের তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সভা শুরু হয়েছে। সেখানে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে বুয়েটকে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আনতে ইউজিসিকে সভা করার অনুরোধ জানিয়েছি। সে সভা হলে আমরা পুনরায় আবার সিদ্ধান্ত নেবো।’

জানা গেছে, বুয়েটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নেয়া প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে চারটি প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমসিকিউ পরীক্ষা হবে। এতে উত্তীর্ণ ভর্তিচ্ছুরা বুয়েট ক্যাম্পাসে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেবে। এতে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে। এ প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে থাকতে চায় বুয়েট।

পড়ুন: বুয়েট রাজি না হলে আলাদা গুচ্ছ পরীক্ষা রুয়েট কুয়েট চুয়েটের

বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন এ বিষয়ে সোমবার (২১ ডিসেম্বর) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন সব দায়িত্ব ভর্তি পরীক্ষা কমিটির। তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী ভাবছে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’

তবে বুয়েটের প্রস্তাবিত এ ভর্তি প্রক্রিয়ায় অন্য তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আপত্তি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় তিনটির কর্তৃপক্ষ বলছে, গুচ্ছ পরীক্ষা হলে অবশ্যই সম-অংশীদারিত্ব নিশ্চিত হতে হবে। অর্থাৎ একেক বছর একেক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বে থাকবে। এছাড়া সবার সমান অংশগ্রহণে যে কেন্দ্রীয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি থাকবে, সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রস্তাবনা দিয়ে ব্যবস্থা নিতে ইউজিসির পাশাপাশি বুয়েটকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (বিআইটি) অধীনে আগে কুয়েট, চুয়েট ও রুয়েটে একযোগে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। সে সময় যথাক্রমে বিআইটি খুলনা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী নামে পরিচিত ছিল। এখন গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা প্রসঙ্গ আসায় এবং বুয়েটের প্রস্তাবে রাজি না হতে পারায় তিন বিশ্ববিদ্যালয় মিলে আবারো সে ধরনের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে।

The Daily Campus এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন