গুচ্ছ থেকে বের হতে এবার অনড় থাকবে বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি
- বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:২৪ PM , আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৬ PM
গুচ্ছ থেকে বের হয়ে আসন্ন ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় ফিরে আসার দাবি জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি এই দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অনড় থাকবে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটির। সমিতির সভাপতি আবু সালেহ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলতি বছরের ৬ এপ্রিল বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে আসার বিষয়ে বিবৃতি প্রকাশ করে। সেখানে প্রচলিত গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার বেশকিছু উল্লেখযোগ্য অসুবিধা তুলে ধরা হয়েছিল। সাধারণ সভায় শিক্ষকদের মতামত ও অনলাইন জরিপে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষকদের মতামত ও ২৮তম একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত বিবেচনায় নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে আসার দাবি জানায়।
“এরপর রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের অভিপ্রায় সম্বলিত একটি চিঠি পেয়ে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষকদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাময়িকভাবে প্রচলিত গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। আচার্যের ওই চিঠিতে আরও উল্লেখ ছিল, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে সমন্বয় করে একক ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে।”
যদি ইউজিসি একক ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়। তবে পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত মোতাবেক বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি পূর্বের ন্যায় আসন্ন ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরে আসার দাবিতে অনড় থাকবে— বলা হয় বিবৃতিতে।
জানা যায়, ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ থেকে বের হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষক সমিতি। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এই বিষয়ে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়েছিল। জরিপে প্রায় শতভাগ শিক্ষক গুচ্ছ পদ্ধতি বশেমুরবিপ্রবির ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উপযোগী নয় বলে মতামত দিয়েছিলেন এবং ৯৭.৩ শতাংশ শিক্ষক পূর্বের নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার পক্ষে মতামত দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া ৩ শতাংশ শিক্ষক ব্যপক পরিবর্তন সাপেক্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করা যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছিলেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর সাথে অনুষ্ঠিত এক সভায় বর্তমান শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এই জরিপের ফলাফল শিক্ষামন্ত্রীর হাতে সভা চলাকালে হস্তান্তর করা হয়েছিলে।
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসার দাবির পেছনে ছয়টি কারণ উল্লেখ করেছিলেন। তাদের মধ্যে ৮১ শতাংশ গুচ্ছ ভর্তিতে সমন্বয়হীনতা ও দীর্ঘসূত্রিতা এবং শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও আনুষঙ্গিক ভোগান্তিকে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে না চাওয়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
এছাড়া ৬৩ শতাংশ একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুসরণে অসুবিধা, ৫৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতা, ৫৩ শতাংশ সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাব এবং ৫১ শতাংশ আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবকে কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
তবে পরবর্তীতে বশেমুরবিপ্রবিসহ বিগত শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সব বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছে রেখে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজিসি) দায়িত্ব দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। গত ১৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপতির নির্দেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়েছিল।