চলতি এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন

এইচএসসি পরীক্ষা
এইচএসসি পরীক্ষা  © ফাইল ছবি

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের স্থগিত পরীক্ষাগুলো আর দিতে চান না পরীক্ষার্থীদের একাংশ। এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রমোশন অথবা অটোপাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। সেবারও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এবং বন্যার কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ও সময়ে তাদের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল।

জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৯ জুন এসএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা থাকলেও সিলেটসহ কয়েকটি অঞ্চলে বন্যা হয়েছিল। এতে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় পরীক্ষায় পিছিয়ে দেয় সরকার। পরে ১৫ সেপ্টেম্বর সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাস করা সিলেবাসে ৩ ঘণ্টার পরিবর্তে ২ ঘণ্টা পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। নৈর্ব্যক্তিক বা এমসিকিউ ২০ মিনিট ও লিখিত ছিল ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের।

আগের নিয়মে ১০টায় হলেও এ বছর পরীক্ষা শুরু হয় বেলা ১১টায়। তবে অতিরিক্ত সময় পেয়েছিলেন বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা। সাধারণত প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসএসসি ও এপ্রিলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়। তবে করোনাকালে এ দুটি পাবলিক পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। এর আগের বছর এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হলেও করোনার কারণে এইচএসসিতে অটোপাস দেওয়া হয়েছিল। ২০২২ সালে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় ২০ লাখ ২১ হাজার ৮৬৮ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। তারাই এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।

দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে পিছিয়ে যাওয়ায় এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রমোশন অথবা অটোপাস দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এ দাবিতে কয়েকদিন ধরে ঢাকাসহ সারাদেশে মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবির বিষয়ে আজ মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার সোমবার (১৯ আগস্ট) বলেছেন, মন্ত্রণালয়ে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো জানিয়েছেন। সেখান থেকে কিছু মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেটা নিয়ে মঙ্গলবার সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষা সচিব, বোর্ড চেয়ারম্যানরা অংশ নিতে পারেন। এতে সব কিছু চূড়ান্ত হবে।

গত ৩০ জুন এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়। রুটিন অনুযায়ী ৮ দিন পরীক্ষা হওয়ার পর কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ১৮ জুলাইয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর আর তিন দফায় পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।

আরো পড়ুন: এইচএসসিতে অটোপাস নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে আজ

সূচি অনুযায়ী, এখনো ১৩ দিনের ৬১টি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) বিভিন্ন বিষয় থাকায় পরীক্ষাগুলো আটকে গেছে। যদিও প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১৩ বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এরমধ্যে বাধ্যতামূলক বাংলা ও ইংরেজির চারটি বিষয় (প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) এবং আইসিটি। আটটি বিষয় ঐচ্ছিক (অপশনাল)। 

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের জেরে বিভিন্ন থানা হেফাজতে থাকা প্রশ্নপত্র পুড়ে যাওয়ায় শেষ করা যায়নি এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। কোটা সংস্কার আন্দোলনের জেরে স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো ১১ আগস্ট থেকে শুরু করার কথা থাকলেও তা হয়নি। একমাস পিছিয়ে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষাগুলো শুরু হওয়ার কথা আছে। তবে আর পরীক্ষায় বসতে চাচ্ছেন না পরীক্ষার্থীরা। তারা বাকি বিষয়গুলোতে অটোপাস বা অটো প্রমোশন চাচ্ছেন।


সর্বশেষ সংবাদ