পাকিস্তানি বিমানের জন্য বন্ধ হলো ভারতের আকাশসীমা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ০৯:০৪ AM , আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ০৫:০৮ PM
পহেলগাঁওয়ে প্রাণঘাতী হামলার জেরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। বুধবার রাতে নয়াদিল্লি ঘোষণা করেছে, পাকিস্তানের সব ধরনের বিমানের জন্য ভারতের আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে পাকিস্তান থেকে পরিচালিত কিংবা সেখানে নিবন্ধিত কোনো বিমান আর ভারতের আকাশ ব্যবহার করতে পারবে না।
ভারত সরকার ‘নোটিস টু এয়ার মিশন’ (NOTAM) জারি করে জানায়, নিষেধাজ্ঞা সামরিক বিমানেও প্রযোজ্য হবে। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও এর আগেই ভারতের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। দুই দেশের মধ্যে আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় আকাশপথে যোগাযোগে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হয়েছে।
ভারতের অভিযোগ, পহেলগাঁও হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে, যদিও ইসলামাবাদ প্রথম থেকেই সেই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। হামলার পর থেকেই ভারত একের পর এক কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত রাখা এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল। পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানও ভারতের বিমানের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়।
সূত্র জানায়, পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় সম্ভাব্য ভারতীয় সামরিক অভিযানের আশঙ্কায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। দেশটির বিমানবাহিনী আকাশসীমায় নজরদারি বাড়িয়েছে এবং জানানো হয়েছে, অনুমতি ছাড়া কোনো বিদেশি বিমান পাকিস্তানের আকাশে ঢুকতে পারবে না। এমনকি পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সব ফ্লাইট বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগেও পাকিস্তানি বিমানগুলো সতর্কতামূলকভাবে ভারতের আকাশ এড়িয়ে চলছিল, তবে এবার আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞার ফলে সেই রুট একেবারে বন্ধ হয়ে গেল। এতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ওশিয়ানিয়ার দেশগুলোর উদ্দেশে যাওয়া পাকিস্তানি ফ্লাইটগুলোর বিকল্প দীর্ঘ রুট নিতে হবে, ফলে সময় ও খরচ—দুটোই বাড়বে। যাত্রীদের জন্য টিকিটের দামও বাড়তে পারে।
এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলোকেও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তিও বেড়েছে।
পহেলগাঁও হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশকে দায়িত্বশীল আচরণ ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, তিনি দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন। পরিস্থিতির অবনতি রোধে যুক্তরাষ্ট্র সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে।
তবে হামলার পর ভারতকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানালেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনো সমালোচনা করেনি ওয়াশিংটন। এমন প্রেক্ষাপটে ভারতের এই সর্বশেষ পদক্ষেপে দক্ষিণ এশিয়ার উত্তেজনা আরও জটিল আকার নিচ্ছে।