টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে হাঁটুপানি, তীব্র ভোগান্তি নগরবাসীর
- মো. আবদুর রহমান
- প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৬ AM , আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৬ AM
রাজধানী ঢাকায় টানা মুষলধারে বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। মধ্যরাতে শুরু হওয়া ভারী বর্ষণ ও বজ্রপাত সোমবার সকালেও অব্যাহত রয়েছে। সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে জমে গেছে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে অফিসগামী ও খেটে খাওয়া মানুষজন পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে।
রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট, বেইলি রোড, সিদ্ধেশ্বরী, মৌচাক, মালিবাগ মোড়, শান্তিনগর মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ও অলিগলিতে হাঁটুসমান পানি জমে গেছে। শান্তিনগর ও মৌচাক এলাকার প্রধান সড়কে রয়েছে কোমরসমান পানি। এসব এলাকায় রিকশা চলাচলও হয়ে পড়েছে ব্যাহত, যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
সরে জমিনে দেখা যায়, টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস গেট, বেইলি রোড, সিদ্ধেশ্বরী, মৌচাক, মালিবাগ মোড়, শান্তিনগর মোড়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। এসব এলাকার অলিগলিতে হাঁটুসমান পানি।
চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন চাকরিজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ যারা জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হয়েছেন। অনেক এলাকায় দেখা গেছে না আছে গাড়ি, না আছে উপযুক্ত চলাচলের সুযোগ। বহু মানুষ ভেজা শরীরেই অফিস করতে বাধ্য হয়েছেন।

মগবাজারের বাসিন্দা ও বেসরকারি চাকরিজীবী তৌহিদুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘হাঁটুপানি মাড়িয়ে মেইন রোডে আসতে হয়েছে। সকাল ৮টায় অফিসে যাওয়ার জন্য বের হয়েছি, রাস্তায় ভয়াবহ অবস্থা। এই পানি কখন নামবে জানি না। নোংরা পানিতে পা দিয়ে হাঁটার কারণে চুলকাচ্ছে।’
একই দুর্ভোগের কথা জানালেন মালিবাগের কর্মজীবী এ কে সাইমুম। তিনি বলেন, ‘কোমরসমান পানির মধ্য দিয়ে কোনোভাবে রিকশা নিয়ে মগবাজার এসেছি। বৃষ্টির কারণে গাড়ি নেই, আর দু-একটা থাকলেও এত মানুষ উঠতে পারিনি। পুরো শরীর ভিজে গেছে, এখন ভেজা শরীরেই অফিস করতে হবে।’
খামারবাড়ী মোড়ে চা দোকানি আবদুল করিম বলেন, ‘আমরা নিম্নআয়ের মানুষ, কোনোভাবে ছাউনির নিচে বসে আছি। দুই ঘণ্টা ধরে পানি জমে ছিল, এখন একটু কমেছে। সকাল থেকে কাস্টমারই আসছে না। বেচাকেনা একেবারে বন্ধ।’
এদিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমানের দেওয়া পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পূর্ব মধ্যে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় আগামী ২৪ সেপ্টেম্বরের দিকে আরেকটি লঘুচাপ সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি ঘনীভূত হতে পারে।
সংস্থাটি আরও জানায়, সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. ওমর ফারুক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘আজ সারাদেশের আকাশ মেঘলা থাকতে পারে। সেই সঙ্গে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামীকাল মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) থেকে বৃষ্টি কমে যেতে পারে।’