রাবি ক্যাম্পাসে ভাসমান দোকানের ছড়াছড়ি, সরিয়ে না নিলে উচ্ছেদ
- রায়হান ইসলাম, রাবি
- প্রকাশ: ২৫ আগস্ট ২০২২, ০৮:৩৪ PM , আপডেট: ২৫ আগস্ট ২০২২, ০৮:৪৩ PM
যত্রতত্র ভাসমান অবৈধ দোকানে ছেয়ে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস। আবার অনুমতি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে এসব দোকানে দিনরাত চলছে বেচাকেনা। এমনকি ময়লার আবর্জনায় দূষিত হয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসের পরিবেশ। তাই এসব দোকান সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যথায় এসব দোকান উচ্ছেদের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, এবছর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার আগে-পরে ভাসমান ছোটখাটো অনেক অবৈধ দোকানে ছেয়ে গেছে ক্যাম্পাস। এমনকি এসব দোকানে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমতি ছাড়া নেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ লাইন। দিনরাত চলে ব্লেন্ডার, ফ্যান কিংবা বৈদ্যুতিক বাতির মতো আরও অনেক যন্ত্র। পলিথিন, কাগজ কিংবা ময়লা আবর্জনায় অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে পুরো ক্যাম্পাস।
এছাড়া অতিরিক্ত টাকায় খাবার বিক্রি কিংবা দোকানে যথাযথ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ছাড়াই খাবার পরিবেশনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘এসব ভাসমান দোকানে অতিরিক্ত টাকায় খাবার বিক্রি হলেও, সেই তুলনায় খাবারের মান নেই। অনেকটা বাধ্য হয়েই দিনের পর দিন এসব দোকানে খাবার খেতে হয়। তবে একেবারে সব দোকান উঠিয়ে দ্রব্যমূল্য ও খাবারের মান ঠিক রাখার ব্যবস্থা করার কথা বলছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ। এমনকি যত্রতত্র দোকানের ছড়াছড়ি না করে, নির্দিষ্ট কিছু স্থানে এসব দোকান বসানোর ব্যবস্থা করার কথা বলছেন তারা।’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালামের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি ক্যাম্পাসের যত্রতত্র অবস্থিত ভাসমান এসব দোকান তিন দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অন্যথায় ২৫ আগস্টের পর এসব দোকান উচ্ছেদের ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অবস্থিত এসব দোকানপাট দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তর।
এ ব্যাপারে দোকানদাররা জানান, ‘এই বিদ্যুৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইন থেকে নেয়া। এগুলোর কোন অনুমতি নেই। তবে সন্ধ্যার পরে অনেক শিক্ষকরা চা খেতে বসেন, তাই ঘণ্টা খানেক সময় বাতি জ্বালায়। তাছাড়া মোমবাতি জ্বেলে তো দোকানদারি করা কষ্টকর। শিক্ষকদের বলেই বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তারা।’
এ বিষয়ে উপ-রেজিস্টার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সম্প্রতি ক্যাম্পাসের যত্রতত্র অবৈধ অনেক দোকানপাট বেড়ে গেছে। ফলে ক্যাম্পাস অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। তাই ভাসমান অবৈধ দোকান তুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুন : সাত কলেজের বাণিজ্যের পরীক্ষা কাল, আসনপ্রতি লড়বে ৫ জন
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার জাহিদুল ইসলাম জানান, ক্যাম্পাসে এসব ভাসমান দোকান বসার কোন অনুমতি নেই। কিন্তু বিভিন্ন জনকে ধরে ক্যাম্পাসে এসব দোকান গড়ে তুলেছে দোকানিরা। বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টি আমার দপ্তরে নয়, প্রকৌশল দপ্তর দেখে। তাছাড়া ক্যাম্পাসে এমন ভাসমান দোকান নিয়ন্ত্রণে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। শিগগিরই এবিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা তারেক নূর জানান, ‘ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য যত্রতত্র অবস্থিত দোকানপাট কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই ক্যাম্পাসে নতুন নতুন গড়ে ওঠা ভাসমান অবৈধ দোকানগুলোকে সরিয়ে নেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে পুরোনো দোকানগুলো থাকবে। নতুন কিছু দোকানকেও প্রয়োজনের ভিত্তিতে যাচাই-বাচাই করে অনুমোদন দেয়া হবে।’
তিনি আরও জানান, ‘ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য সংরক্ষণে দোকানপাট বসানোর বিভিন্ন পয়েন্ট নির্ধারণের পরিকল্পনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্ধারিত সেই জায়গাতেই এসব দোকানপাট বসাতে হবে।’