ছাত্রলীগের ব্যানারে নয়, ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছি: অভিযুক্তরা

সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি শিক্ষার্থীরা
সংবাদ সম্মেলনে ঢাবি শিক্ষার্থীরা   © টিডিসি ফটো

সম্প্রতি ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই নেতাকে মারধরের ঘটনায় মারধরকারী ছাত্রলীগের ছয় কর্মী গতকাল সোমবার প্রকাশ্যে ক্ষমা চায়। কিন্তু তাদের ওই মারধরের ঘটনা ব্যক্তিগত জায়গা থেকে করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ কর্মীরা। এর দায় ছাত্রলীগের উপর না চাপানোর অনুরোধ করেন তারা।

আজ মঙ্গলবার (২৩ আগষ্ট) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে (ডুজা) এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগ কর্মীরা বলেন, গত শুক্রবার আমাদের হলের বন্ধুকে  শাহবাগ থাানার পাশে মারধর করা হচ্ছে এরকম একটি তথ্যের ভিত্তিতে আমরা শাহবাগ যাই এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়ি। এতে ছাত্র অধিকার পরিষদের দুই জন কর্মী আহত হয়। পরে আমরা জানতে পারি, এটা একটা ভুল তথ্য ছিলো এবং আমাদের বন্ধুকে মারধর করা হয়নি। ওইদিন তাৎক্ষণিকভাবে ওই পরিস্থিতিতে ভুল বোঝাবুঝি’র দরুন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিলো।  

তারা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সাথে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আমরা দুঃখ প্রকাশ করি এবং ভুল বোঝাবুঝি দূর করে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করি। কিন্তু সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু অনলাইন পোর্টালে নিউজ করা হয়, ‘ছাত্রলীগ বা ছাত্রলীগ কর্মী ক্ষমা চেয়েছে’ যা সত্য ঘটনার সাথে পুরোপুরি সংগতিপূর্ণ নয়। এতে প্রতীয়মান হয় যে, আমাদের ব্যক্তিগত ভুলে সংগঠনকে দায় দেওয়া হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করায় আমরা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছি।

এই ঘটনায় ব্যক্তিগতভাবে লজ্জিত বলে মনে করেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। তারা বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমরা ব্যক্তিগতভাবে লজ্জিত। আমাদের ব্যক্তিগত ভুলের জন্য কোনভাবেই সংগঠনকে জড়ানো ঠিক হবে না। মূল ঘটনাটি হলো আমরা সবাই ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছি এবং উভয় পক্ষ সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করেছি। কারণ আমরা ছাত্রলীগের নির্দেশে সংঘর্ষে জড়াইনি। এমনকি ছাত্রলীগের প্রতিনিধি হিসেবেও দুঃখ প্রকাশ করিনি।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (১৮ আগষ্ট) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মিফতাহুল মারুফকে জঙ্গি অভিযোগে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাল হোসেন। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে পরের দিন শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে থানা থেকে বের করে নিয়ে আসার সময় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির সামনের ফুটপাতে অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগের ছয় কর্মী। 

এই হামলার ঘটনায় ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক সালেহউদ্দিন সিফাত, অর্থ সম্পাদক আহনাফ সাঈদ খান গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন- আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিল তুষার,  গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের হেদায়েত উল্লাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ইত্তেজা হোসেন রাকিব, পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মাসুরুর রুদ্র, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সুমন আলী, এফ রহমান হল ছাত্রলীগ কর্মী রোকনুজ্জামান রোকন। সংবাদ সম্মেলনে এরা সবাই উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ