চবির চার ছাত্রীর মারামারি, জুনিয়রের হাতে লাঞ্ছিত সিনিয়র
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২২, ০৩:৩৮ PM , আপডেট: ১২ আগস্ট ২০২২, ০৩:৪৪ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাখা ছাত্রলীগের জুনিয়র দুই নেত্রীর বিরুদ্ধে সিনিয়র দুই নেত্রীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (১১ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলে এ ঘটনা ঘটে। হলের রুমে প্রবেশে অনুমতি নিতে বলায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী হলেন- ছাত্রলীগের উপ-স্কুলছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও সংস্কৃত বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের ছাত্রী সিমা আরা শিমু এবং উপছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী সাজামুন নাহার ইষ্টি।
অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ও ছাত্রলীগের নেত্রী। তাদের একজন ইংরেজি বিভাগের তাসফিয়া জাসারাত নোলক ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। অন্যজন হলেন- নির্জনা ইসলাম নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের উপ-কৃষিশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন আগে অভিযুক্ত তাসফিয়া জাসারাত নোলককে মাদকদ্রব্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের পাশ থেকে রাত ১২টার দিকে হাতেনাতে ধরেন প্রক্টরিয়াল বডি। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, ছাত্রলীগ নেত্রী সাজমূল নাহার ইষ্টি ও তার রুমমেট নির্জনা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলের ২০৩ রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে নির্জনা ও ইস্টি রুমের মধ্যে ছিলো। এ সময় নোলক তাদের রুমে প্রবেশ করেন। নোলকে হুটহুট নক না করে রুমে প্রবেশ করতে বারণ করায় নির্জনা ও নোলক ইষ্টির সঙ্গে তর্কে জড়ায়। এরপর ইষ্টি নির্জনার মা ও নোলকের বাবাকে এ বিষয় জানালে নোলক আবার তার রুমে আসেন এবং ইষ্টির সঙ্গে আবারও তর্কে জড়ান। এ সময় পাশের ছাত্রলীগ নেত্রী ও নাট্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী সীমা আক্তার তাদেরকে থামানোর চেষ্টা করলে তাকে চড় মারেন। এরপর তারা উভয়ে এক অপরকে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেত্রী ইস্টি জানান, ‘নোলক আমার রুমে হুটহাট করে ডুকে। এভাবে রুমে না আসতে বলায় নোলক তর্কাতর্কি শুরু করে। এ বিষয়ে আমি নির্জনার আম্মু ও নোলকের বাবাকে ফোনে জানাই। এরপর নোলক আমার রুমে এসে গালাগালি করে। সীমা আপু তাকে থামানোর চেষ্টা করলে সে সীমা আপুকে চড় মারে। পরে হলের অন্য শিক্ষার্থীরা আমাদের উদ্ধার করেন।’
আরও পড়ুন : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মার্কশিটে এত ভুল!
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নোলককে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
দেশনেত্রী খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট ড. মো. সাইদুল ইসলাম সোহেল বলেন, ‘২০৩ নাম্বার রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী ইষ্টি ও নির্জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় নোলক তাদের রুমে যায় এবং তর্কাতর্কি করে। একপর্যায়ে ইষ্টির সাথে হাতাহাতি হয়। ইষ্টি ও নির্জনার ব্যাপারে আমাদের কাছে পূর্বে কোন অভিযোগ না থাকলেও নোলকের বিরুদ্ধে প্রক্টর অফিস আগেই অভিযোগ দিয়ে বলেছিল যে সে আইন না মেনে অনেক রাতে পর্যন্ত বাইরে থাকে এবং এ ব্যাপারে নোলকের বাবাকেও ইনফর্ম করা হয়েছে।
এ সময় হল প্রভোস্ট আরও বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী আমরা একটা হলবুক মেইনটেইন করি। নোলক রাত করে হলে আসলে, আমরা তাকে মৌখিকভাবে এ বিষয়ে আগে সতর্ক করেছি। আজকের ঘটনায় যার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, তাকে হয়তো হল থেকে বের করে দেয়া হবে।’
চবি প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ‘ছাত্রীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। পরে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেখানে যান। এ ঘটনায় অভিযুক্তের সংশ্লিষ্টতা পেলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো।’