চবিতে বিতর্কিত নিয়োগের সুপারিশ বাতিল
- চবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২২, ০৭:০০ PM , আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২২, ০৯:৫১ PM
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিতর্কিত নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশ বাতিল করেছে সিন্ডিকেট সভা। শনিবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেটে এটি বাতিল করা হয়।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্যে বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে লবিংয়ের অডিও ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে তৈরী হয় সমালোচনা। স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং সততার স্বার্থে নিয়োগ বোর্ডের এ সুপারিশ সিন্ডিকেট সভায় রেফার্ড-ব্যাক করার মধ্যদিয়ে বাতিল করা হয়েছে।
সভায় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, এ ঘটনা তদন্তে সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক এ.কে. এম মাইনুল হক মিয়াজীকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কর্ম দিবসের মধ্যে অভিযুক্তের বক্তব্য নিয়ে দোষীদের বিচারের আওয়াত নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়।
আরও পড়ুন: চবিতে শিক্ষক হতে লাগবে ১৬ লাখ টাকা!
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার বিষয়টি আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সিলেকশন বোর্ডে বিভাগসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ শিক্ষক না রাখা, উচ্চ আদালতের রুল নিষ্পত্তি না করেই নিয়োগপ্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ নানা অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ ছিল ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের এ নিয়োগ কার্যক্রম।
এর মধ্যে প্রার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শিরীন আখতারের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মিছবাহুল মোকর রবীন ও হিসাব নিয়ামক শাখার কর্মচারী আহমেদ হোসেনের আর্থিক লেনদেনবিষয়ক ফোনালাপের কয়েকটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে।
আর এ কারণে তোপের মুখে বৃহস্পতিবার রবীনকে উপাচার্যের একান্ত সহকারী পদ থেকে সরিয়ে আগের কর্মস্থল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে বদলি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান জানিয়েছেন, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অডিও প্রশাসনের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। তাই রবীনকে উপাচার্যের পিএস থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফাঁস হওয়া ফোনালাপের সত্যতা যাচাই শেষে অপরাধী কাউকে ছাড় দেবে না প্রশাসন।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে চবি উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও সততার স্বার্থে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। অডিও ক্লিপটি সংবাদমাধ্যমে প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতোমধ্যে আমার সহকারী খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীনকে উপাচার্য দফতর থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ৩ কর্মদিবসের মধ্যে খালেদ মিছবাহুল মোকর রবীন ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী আহমদ হোসেনকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা জড়িতদের চিহ্নিত করেছি এবং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। জড়িতদের এক বিন্দুও ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা ইতোমধ্যে হাটহাজারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। প্রয়োজনে আরও গভীরভাবে তদন্তের জন্য আমরা দুদকের সহযোগীতাও চাইবো।
উপাচার্য আরও বলেন, আমি উপাচার্যের দায়িত্ব নিয়েছি সততার সঙ্গে কাজ করার জন্য। আমি অন্যায়কে ছাড় দেবো না। আমাদের নিয়োগ বোর্ড সম্পূর্ণ সততা এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করে আসছে। তাই অর্থ লেনদেনের কোনও সুযোগ নেই।