অফলাইন-অনলাইন ক্লাস ব্যবস্থায় ‘চিন্তিত’ জাবি শিক্ষার্থীরা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ১১ অক্টোবর থেকে খুলেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল। আর আগামী ২১ অক্টোবর থেকে মিশ্র মাধ্যমে (হাইব্রিড) শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করবে বিশ্ববিদ্যালয়টি। অর্থাৎ অনলাইন ও অফলাইন উভয় মাধ্যমেই চলবে ক্লাস-পরীক্ষা।

তবে কোন ক্লাস-পরীক্ষা অনলাইনে আর কোনটি অফলাইনে হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্তের বিষয়টি স্ব স্ব বিভাগের উপর ছেড়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না হওয়ায় হাইব্রিড ব্যবস্থার বিষয়টি এখনও সুস্পষ্ট নয় শিক্ষার্থীদের কাছে। তাই তাদের আশঙ্কা, এই ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

মিশ্র শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে জাবির কলা ও মানবিকী অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড.  মোজাম্মেল হক জানান, শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট কোর্সের প্রকৃতি অনুযায়ী কোর্স শিক্ষক ঠিক করবেন তিনি সরাসরি ক্লাস নেবেন নাকি অনলাইনে ক্লাস নেবেন।

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সশরীরে ক্লাস চললেও কেউ যদি অসুস্থ থাকে তাহলে অনলাইনে যুক্ত হতে পারবে। শিক্ষার্থীদের জন্য হলে ও বিভাগে ভালো ইন্টারনেট সুবিধা চালুর জন্য আমরা পরামর্শ দিয়েছি।   

পূর্বের মত নির্ধারিত সময়সূচি থাকবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটাও শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলে ঠিক করবে। শিক্ষার্থীদের কোন অসুবিধা যেন না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল থাকবে।

তবে এমন আশ্বাসে সন্তুষ্ট নন শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, করোনা মহামারির শুরুর আগে প্রতিটি কোর্সের জন্য বিভাগ কর্তৃক নির্ধারিত একটি রুটিন ছিল। তবে সাধারণত প্রতিদিন রাতে কোর্স শিক্ষক শ্রেণী প্রতিনিধিকে (সিআর) জানিয়ে দিতেন যে, পরবর্তী দিন কোন সময়ে সেই ক্লাসটি নেবেন তিনি। অনেক সময় হঠাৎ করেই এক-দুই ঘন্টার নোটিশে ক্লাস নিতেন কোন কোন শিক্ষক। আবার কেউ কেউ পূর্ব নির্ধারিত ক্লাসের সময় শুরু হয়ে যাওয়ার পরে সেই ক্লাস বাতিল করতেন।

শিক্ষার্থীরা আরও বলছেন, আগের মত এমন হলে খুব একটা সমস্যা হতো না। কিন্তু শিক্ষকরা যদি হাইব্রিড ব্যবস্থায়ও এভাবে হঠাৎ ক্লাস সময় জানানো কিংবা বাতিল করার পূর্বের অভ্যাস জারি রাখেন, তাহলে অসুবিধায় পড়বেন তারা।

জাবির একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, আগে তো সব ক্লাসই সশরীরে হতো, তাই তেমন সমস্যা হতো না। কিন্তু এখন অনলাইনে হলে ইন্টারনেট ও নির্দিষ্ট ডিভাইস নিয়ে অনেকের সমস্যায় পড়তে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, আমাদের অধিকাংশ বিভাগে শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া ইন্টারনেটের স্পিড খুবই কম থাকে। আর হলের কথা তো বলাই যাবে না। সেখানে ইন্টারনেট কাভারেজই নেই সব জায়গায়। তাই শিক্ষার্থীরা বাইরের থেকে ব্রডব্যান্ড লাইন এনে চালায়। এমন অবস্থায় সশরীরে ক্লাস শুরুর পরেও অনলাইন ক্লাস চললে ইন্টারনেট কিনে আমাদের চলতে হবে। যেটা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে।

যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তেমনই চায়, তাহলে ইন্টারনটের জন্য আমাদের আলাদা ভাতা দিক, বলেন ওই ছাত্রী।

অনলাইন ক্লাস নিয়েও আছে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করে আমরা দেখলাম যে শিক্ষকরা নিজেদের খেয়াল-খুশিমত দুই-এক ঘন্টা আগে ফেসবুক বা মেসেঞ্জারে নোটিফিকেশন দিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। বিভিন্ন কারণে কেউ কথা বলতে পারছেন না। যদি মহামারির আগের মত শিডিউল না থাকে তাহলে আমাদের বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়। অনলাইন পরীক্ষায়ও আমাদের অভিজ্ঞতা খুব বেশি ভালো না। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা না থাকলে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।  

শিক্ষার্থীদের এসব অভিযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবনা জানতে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে জাবির জীববিজ্ঞান অনুষদের ডীন আব্দুল জব্বার হাওলাদার এ প্রসঙ্গে বলেন, উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা ভেবেই মিশ্র ক্লাস ব্যবস্থার অনুমতি দিয়েছেন। আশাকরি বিভাগগুলোও কোর্সের প্রকৃতি অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বয় করে ক্লাস-পরীক্ষা চালিয়ে নেবেন। এক্ষেত্রে ইন্টারনেট সহ অন্যান্য সমস্যা হলে সেসবও সমাধানের চেষ্টা করা হবে।   


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence