রাবিতে করোনায় মানসিক স্বাস্থ্য সংকট ও উত্তরণ শীর্ষক সেমিনার

রাবিতে ‘শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন মানসিক স্বাস্থ্য সংকট ও উত্তরণ’ শীর্ষক সেমিনার
রাবিতে ‘শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন মানসিক স্বাস্থ্য সংকট ও উত্তরণ’ শীর্ষক সেমিনার  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্টস এগেইন্টস ভায়োলেন্স এভ্রিহোয়ার (সেইভ) এর আয়োজনে ‘শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন মানসিক স্বাস্থ্য সংকট ও উত্তরণ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৮ জুন) সন্ধ্যায় অনলাইনে আয়োজিত এই সেমিনার চলে রাত প্রায় ১০টা পর্যন্ত।

সেইভ রাবি চ্যাপ্টারের মডারেটর অধ্যাপক মামুন আব্দুল কাইয়ুমের সঞ্চালনা প্রধান অতিথি হিসেবে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা। আলোচক হিসেবে মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজীর আহমেদ তুষার, মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব।

চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী ও রাবি মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজীর আহমেদ তুষার বলেন, সব পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। অবস্থা যেমনই হোক বাঁচতে হবে। পাশাপাশি পড়াশোনাটাও চালু রাখা উচিত। ফলে কাজের মধ্যে নিজেকে ব্যস্ত রাখাতে পারলে কুচিন্তা মাথায় কম আসবে।

এক্ষেত্রে আটটি বিষয়ে ফোকাস করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ব্যাক্তিগত, পারিবারিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, পেশাগত, আত্মীয়তা, বুদ্ধিবৃত্তিক, আধ্যাত্মিক এবং মনোযোগ সহকারে কাজ করার পাশাপাশি চিন্তামুক্ত হওয়ার চর্চা করতে হবে।

মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক মুর্শিদা ফেরদৌস বিনতে হাবিব বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য একটি অবস্থা যা ঠিক থাকলে সকল কাজ ও কর্তব্য সুষ্ঠুভাবে পালনের পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে গুড ফিল পাওয়া যায়। আমাদের এখন সাইকোলজিকাল ইমিউনিটিও জরুরি হয়ে উঠেছে। ডোপামিন, সেরেটোনিন, এন্ডোরফিন নামক ইতিবাচক হরমোন মানসিক সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতীত নিয়ে ভাবলে হতাশা এবং ভবিষ্যত নিয়ে ভাবলে উদ্বিগ্নতা দেখা দেয়।

তিনি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, এই মূহুর্তে শিক্ষার্থীদের উচিত হবে, খাওয়া দাওয়া এবং পড়াশোনার দিকে মনোযোগ দেয়া। জীবন একটাই, জীবনকে ভালোবাসা, নিজের ভালো থাকা দিয়ে অন্যকে ভালো রাখার জন্য কাজ করতে হবে।

সেমিনারে সেইভ-এর ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর ড. আইনুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারী পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলার আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। প্রায়োগিক বিষয়গুলোর দিকে গুরুত্ব দেওয়া, যেমন মনের যত্ন নেওয়া। নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জায়গাগুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে। কোনো পরিস্থিতি থেকে পালিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না বলে জানান তিনি।

এই পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের এমন মানসিক অবস্থায় দুঃখ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. আনন্দ কুমার সাহা বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই খারাপ একটা মূহুর্ত। তবে এতে যেহেতু মানুষের কোন হাত নেই, তাই সকলকে মানসিক ভাবে শক্ত হওয়ার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি দ্রুত ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

সেমিনারে সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলসহ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, সেইভ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০০ এর বেশি সদস্য নিয়ে ১৩টি চ্যাপ্টার পরিচালনা করছে। সংগঠনটির বাংলাদেশের যুবকদের একটি প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার লক্ষে কাজ করছে। যাতে বিশ্বব্যাপী শান্তি ও বৈচিত্র্য ভূমিকা রাখতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ