রাবিতে উপাচার্যের গণনিয়োগ বাতিল হতে পারে, শাস্তি পাবেন জড়িতরা

রাবিতে বিতর্কিত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আজ সংঘর্ষে জড়ান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা
রাবিতে বিতর্কিত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আজ সংঘর্ষে জড়ান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা  © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই না কারণে আলোচিত ছিলেন এম আবদুস সোবহান। অনিয়ম ও দুর্নীতির অসংখ্য অভিযোগে অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় তাঁর মেয়াদের শেষ কর্মদিবসেও ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি। যে নিয়োগকে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূত বলে মনে করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ মে) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে এ নিয়োগ দেন তিনি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় বলছে, এভাবে অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতার সুযোগ নেই। এই অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়। এতে আহবায়ক করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীরকে।

বাকি সদস্যরা হলেন ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মো.আবু তাহের, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জাকির হোসেন আখন্দ। সদস্যসচিব করা হয়েছে ইউজিসির পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমানকে। এ কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে সাত কর্মদিবসের মধ্যে। তদন্তের পর এ নিয়োগ বাতিল হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

রাবি উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে অধ্যাপক আনন্দ কুমার

এদিকে এ নিয়োগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তুমুল সমালোচনা। অনেকে এমন নিয়োগ কীভাবে সম্ভব, সেটিই বিশ্বাস করতে পারছেন না। সাঈদ সজল লিখেছেন, ‘মারামারিতে যারা জিতছে তারাই নিয়োগ পাইছে। আজ আমি কেন রাবিতে ছিলাম না৷ ইকটু মারামারি করলেই যেকোনো একটি পোস্ট আজ পাইতাম। ১৪১ জনের লিস্টে নামটা উঠতো। কথা রাখলেন রাবি ভিসি, আমি থাকতে পারলাম না। আফসোস!’

মেসুমি জাহান একদিনে বিপুল সংখ্যক নিয়োগ বিস্ময় প্রকাশ করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘একটু কম হয়ে গেল না?’

২০১৭ সালের মে মাসে দ্বিতীয় মেয়াদে অধ্যাপক আবদুস সোবহান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নেন। এই মেয়াদে তাঁর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে মেয়ে ও জামাতাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এছাড়া আরও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ইউজিসির তদন্তে এর সত্যতা মেলার পর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ডিসেম্বরে ১২টি পৃথক নোটিশ দিয়ে নানা নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। তবে বড় অভিযোগগুলোর বিষয়ে এ পর্যন্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এরমধ্যেই শেষ দিনেও ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়ে গেলেন তিনি। নিয়োগ পাওয়া প্রায় সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও কর্মচারীদের সঙ্গে মহানগর ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

জানা গেছে, এ ‘অবৈধ নিয়োগ’ ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে সুপারিশ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি। কমিটি গঠনের আদেশে বলা হয়েছে, রাবির বিদায়ী উপাচার্য আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ইউজিসি তদন্ত করেছে। এর প্রতিবেদনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিতও হয়।

এরপর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখতে উপাচার্যকে অনুরোধ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু উপাচার্য তা উপেক্ষা করে তাঁর মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ করেছেন। মন্ত্রণালয় এমনটি জানতে পেরেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে নিয়োগে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence