হল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাবি ছাত্রলীগ

জাবি ও ছাত্রলীগের লোগো
জাবি ও ছাত্রলীগের লোগো  © ফাইল ফটো

কেন্দ্র থেকে নির্দেশনার পর হল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সেই সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদেরও হল ছাড়তে আহ্বান জানিয়েছে তারা। জাবি শাখা ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক হিমাদ্রি শেখর মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, ‘প্রায় ৫০০-৬০০ ছেলেপেলে গেরুয়ায় থাকে মেস ভাড়া করে। ওইখানে তাদের থাকার অবস্থা ছিল না। ওই পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে হলে ঢোকে। তখন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সব সময় একটা স্ট্যান্ড পয়েন্ট এমন থাকে যে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা যেন কোনভাবে বিপদে না পরে এটা দেখার। আমাদের জায়গায়ও এটাই ছিল।

‘শিক্ষামন্ত্রী বলার পর কালকে রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে নির্দেশনা আসছে যে, হলে থাকা যাবে না। সেই জায়গা থেকে আমরা যারা ছাত্রলীগ করি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অমান্য করার সুযোগ নেই আমাদের। ওই নির্দেশনায় হয়ত কিছু সময়ের মধ্যে আমরা জাবি শাখা ছাত্রলীগ হল ছেড়ে দেব।’

সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘কবে হল খুলবে, কবে বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে এতদিন এ ধরনের কোনো গাইডলাইন ছিল না। এখন কালকে যেহেতু একটা গাইডলাইন আসছে সেহেতু আমরা মনে হয় সরকারি এই সিদ্ধান্তটাকে সবার সাধুবাদ জানানো উচিত।’

তবে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হল ছাড়তে দেখা যায়নি কোনো শিক্ষার্থীকে। ক্যাম্পাসে দেখা যায়নি যান চলাচলও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক আল বিরুনী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, এমএইচ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, নওয়াব ফয়জুন্নেছা ও প্রীতিলতাসহ অন্যান্য হলগুলোতে আছেন শিক্ষার্থীরা।

এর মধ্যে আল বিরুনী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আছেন তুলনামূলক বেশি শিক্ষার্থীরা।

পরিচয় জানাতে অনিচ্ছুক আল বিরুনী হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সেখানে দেড়শ থেকে দুইশ জন থাকছেন। গেরুয়া, আমবাগান ও ইসলামনগরসহ ক্যাম্পাসের আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা নেই বলে তারা এখানে থাকছেন বলে জানান।

সরকারি ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে তারা জানান, আশপাশের এলাকায় গ্রামবাসীর মার খাওয়ার চেয়ে হলে থাকার দাবিতে পুলিশের মার খাওয়া ভালো, তারপরও হল ছাড়বেন না।

তারা বলছেন, হলে বিদ্যুৎ ও পানির সমস্যা নেই। তবে ক্যান্টিন বন্ধ থাকায় ঝুঁকি নিয়ে বাইরে গিয়ে খেতে হচ্ছে।

গত শুক্রবার ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী গেরুয়া গ্রামে স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। শনিবার তালা ভেঙে হলের ভিতরে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা অবস্থানও শুরু করেন।

রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজের সই করা এক জরুরি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশ যারা মানবেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে প্রশাসন।

এর পর সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি জানান, আগামী ১৭ মে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হল খুলে দেয়া হবে। ক্লাস শুরু হবে ২৪ মে থেকে।সেই নির্দেশ না মেনে সোমবার হলেই ছিলেন শিক্ষার্থীরা। বরং সোমবার সকালে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের তালা ভেঙে মেয়েরা হলে প্রবেশ করেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সামিয়া হাসান সোমবার জানান, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেই হলে থাকতে চাইছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য স্পষ্ট। আমরা সেই বক্তব্যগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে বলব। যদি তারপরেও না শোনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত যে শৃঙ্খলা বিধি আছে সেই বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারপরেও যদি বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় রাষ্ট্রীয় প্রচলিত আইনের প্রয়োগের কথাও তিনি বলেছেন।

ফিরোজ বলেন, ‘আমরা চাই না আমাদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এরকম কিছুতে যাই। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা সরকারি নির্দেশনা মেনেই দায়িত্বশীল আচরণ করবে। আমাদের বিশ্বাস তারা সরকারি নির্দেশনা মানবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence