জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ায় বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের উদ্বেগ, মধ্যরাতে জাকসুর প্রতিবাদ

জাকসুতে সংবাদ সম্মেলনে
জাকসুতে সংবাদ সম্মেলনে  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের প্রাতিষ্ঠানিক বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনের ব্যর্থতার প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছে জাবি কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) নেতারা। এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম।

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক শামছুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ বিবৃতি দেওয়ার পর রাত দুইটার দিকে বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু)।

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে ক্যাম্পাসে জুলাই আন্দোলনে হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের বিচার নিশ্চিতের দাবিতে নতুন প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন জাকসুর নেতারা।

জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের বিবৃতিতে বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবসসমূহের প্রাক্কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার ঘটনায় তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। প্রশাসনিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদ্‌যাপনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে সংকটে পড়ছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করার ঘটনায় যখন পুরো ক্যাম্পাস হতবিহ্বল ও শোকাহত, তখন সেই ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনাকে পুঁজি করে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উদ্‌যাপনে বাধা সৃষ্টি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কার কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, এই তালা দেওয়ার ফলে চলমান সুষ্ঠু বিচার কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত হবে। বলপ্রয়োগ ও চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার এ ধরনের কর্মকাণ্ড ফ্যাসিবাদী আমলের ফরমায়েশি রায় ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

বিবৃতিতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম জানায়, তারা অভিযুক্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার পক্ষে। তবে সেই বিচার অবশ্যই আইন, প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া ও নৈতিকতার ভিত্তিতে সম্পন্ন হতে হবে—বলপ্রয়োগ বা প্রশাসনিক অচলাবস্থার মাধ্যমে নয়।

পরে মধ্যরাতে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের দেওয়া বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলন করেন জাকসুর নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে জাকসু নেতারা অভিযোগ করেন, গণ-অভ্যুত্থানে হামলায় যেসব শিক্ষক-কর্মচারী সরাসরি জড়িত ছিলেন, তাদের বিচার নিয়ে আন্দোলন ও সংগ্রাম চলমান ছিল। কিন্তু এক বছর পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষকদের কোনো বিচারের সুরাহা প্রশাসন দিতে পারেনি। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই বিচার সম্পন্ন হয়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাকসুর পক্ষ থেকে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়া হয়েছে। এর পেছনে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য নেই।

জাকসু জিএস মাজহারুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি শরীফ ওসমান বিন হাদীর ওপর হামলার ঘটনাকে পুঁজি করার যে অভিযোগ জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম তুলেছেন, তা দুঃখজনক। হাদির ওপর হামলার ঘটনা এবং অন্যান্য স্থানে বিপ্লবীদের ওপর আক্রমণের আশঙ্কা থেকেই তারা এই প্রতিবাদের কর্মসূচি দিয়েছেন।

শিক্ষক ফোরামকে আহ্বান জানিয়ে জাকসু নেতারা বলেন, আওয়ামীপন্থী শিক্ষক ও বিএনপিপন্থী শিক্ষক সম্পূর্ণ ভিন্ন হতে হবে এবং তারা আশা করেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম যেন আওয়ামী শিক্ষকদের বিচারের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার নমনীয়তা না দেখায়।

সেই সঙ্গে এই বিচার বাস্তবায়নের কাজে ক্যাম্পাসের অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষার্থীদের একাত্মতা পোষণ করার আহ্বান জানিয়েছে জাকসু নেতারা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence