মারধরের ঘটনায় জাবি শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি মেনে নিল নিরাপত্তা বাহিনী

জাবির ভিপি ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বৈঠক
জাবির ভিপি ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের বৈঠক  © টিডিসি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীকে সাভারে কর্তব্যরত সেনাসদস্যের বিরুদ্ধে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে শিক্ষার্থীরা ৫টি দাবি জানালে তা মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন সাভার অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।  

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ইমদাদুল হক ইমন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

জানা যায়, সোমবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সাভারের পাকিজা এলাকায় এসএ পরিবহনের সামনে মারধরের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ইমনের ভাষ্যমতে তিনি সাভার থেকে মোটরসাইকেলে করে ক্যাম্পাসে আসছিলেন। তার মাথায় হেলমেট না থাকায় সাভারের পাকিজা এলাকায় দায়িত্বরত সেনা সদস্যরা তাকে আটকায়। সে  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তার এক মেজর কাজিনের পরিচয় দেওয়ার পরেও সেনাসদস্য তার গাড়ির কাগজপত্র চান এবং তাকে ২ ঘণ্টা আটকে রাখেন। এক পর্যায়ে কর্তব্যরত সেনাসদস্যদের দ্বারা ইমন বেধড়ক মারধরের শিকার হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে এবং সেনাসদস্যদের কাছে মাফ চাইতে তাকে বাধ্য করা হয়। 

এই ঘটনার জেরে এদিন রাত পৌনে দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।

প্রায় আধাঘণ্টা অবরোধ চলার পর সাভার অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে এসে সমস্যার সমাধান করতে চাইলে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। 

রাত পৌনে ১১টার দিকে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাসহ সাভার অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত উর্ধ্বতন কর্মকতা ক্যাম্পাসে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও জাকসুর মধ্যস্ততায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এসময় তারা সেনাবাহিনীর সদস্য কর্তৃক সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। 

আলোচনা শেষে ভুক্তভোগী ইমনের পক্ষ থেকে পাঁচটি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলোর হলো: অভিযুক্ত মেজর এহসান ও ওয়ারেন্ট অফিসার আলীকে ক্ষমা চাওয়া। ভুক্তভোগী ইমনের সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়ভার সেনাবাহিনীর গ্রহণ করা। ভবিষ্যতে ইমন বা তার পরিবারকে কোনো ধরনের হয়রানি শিকার না হয় তার নিশ্চয়তা। দেশের কোনো সাধারণ নাগরিক যেন সেনাবাহিনীর দ্বারা এমন আচরণের শিকার না হন, তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘কোর্ট অব ইনকোয়ারি’ গঠন করে অভিযুক্তদের বিচার করা।

আলোচনায় উপস্থিত সাভার স্টেশন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইনতেখাব হায়দার খান শিক্ষার্থীদের পাঁচ দাবি মেনে নেন এবং তার অগ্রগতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করবেন বলে জানান।

পাঁচদফা দাবির প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই সেনা কর্মকর্তা মেজর এহসান ও ওয়ারেন্ট অফিসার আলী তাদের ভুলের জন্য ক্ষমা চান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার, জাকসু ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু, এজিএস ফেরদৌস আল হাসান। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ