রাবির শিক্ষক নিয়োগে দিতে হবে লিখিত পরীক্ষা, মিশ্র প্রতিক্রিয়া

রাবিতে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
রাবিতে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত  © টিডিসি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক নিয়োগে প্রথমবারের মতো লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে, শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলেও এখন থেকে নেওয়া হবে লিখিত পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে মৌখিক পরীক্ষায় সিলেক্ট করা হবে। গত ২২ জুলাই সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো এ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি লিখেছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। আবেদনকারীকে প্রথমে লিখিত পরীক্ষায় অবতীর্ণ হতে হয়। লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাক্রমে বিজ্ঞাপিত পদ সংখ্যার তিন গুণ বা তার বেশি আবেদনকারী মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হবে। লিখিত পরীক্ষার নম্বর এবং মৌখিক পরীক্ষার পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।

তিনি আরও লেখেন, লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন বোর্ডের সদস্যবৃন্দ বোর্ডে উপস্থিত হয়ে হাতে লিখে বোর্ডের সভাপতির নিকট জমা দেন এবং সেগুলোর মধ্য থেকে বোর্ডের সভাপতি মাননীয় উপাচার্য প্রশ্ন মডারেশন করে চার/পাঁচটি প্রশ্ন ৪৫/৫০ মিনিট পরীক্ষার জন্য নির্ধারণ করেন। পরীক্ষা শেষে একজন সদস্য উত্তরপত্র কোডিং করেন এবং কোডিংকৃত উত্তরপত্র সকল প্রশ্নকারী তার নিজ প্রশ্নের উত্তর মূল্যায়ন করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য জানান, মূল্যায়ন শেষে সকলের নম্বর যোগ করে মেধাক্রম ঠিক করে ডিকোডিং করে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত আবেদনকারীদের রোল নম্বর জানিয়ে দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে আশা করি যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষার্থী শিক্ষকতার সুযোগ লাভ করবেন এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণায় অনবদ্য ভূমিকা রাখবেন।

নতুন এই পদ্ধতির বিষয়ে রাবির পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল হক ফেসবুকে লেখেন, আমি এই লিখিত পরীক্ষার সঙ্গে একমত নই। আমি এর আগেও বলেছি এটা বিভাগের শিক্ষকদের অপমান করার শামিল। বিভাগে এতগুলো কোর্স ভাইভা দিয়ে বিভাগের এতগুলো শিক্ষকের মূল্যায়নে যে ভালো করে সেই সে বিভাগের জন্য যোগ্য। বিভাগের উপর আস্থা নেই, কী এমন জাদুবলে প্রশাসন লিখিত পরীক্ষায়  মেধা যাচাই করবে! এটা দ্রুত বন্ধ করা উচিত। তবে ভাইভা বা প্রেজেন্টশন নেওয়া যেতে পারে।

গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. হারুনর রশিদ সামাজিক মাধ্যমে লেখেন, ‌‘মাননীয় প্রোভিসি স্যার, এই প্রক্রিয়ায় বিশ্বের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ হয়? ৫-৬ বছর প্রতিটি অ্যাকাডেমিক পরীক্ষায় যে শিক্ষার্থী তার মেধার স্বাক্ষর রাখলেন, ৪৫ মিনিটের একটা যেনতেন পরীক্ষা নিয়ে সেখানে মেধাবী প্রমাণ করে ফেললেন আপনারা? বরং আপনারা যদি অ্যাকাডেমিক রেজাল্টে ৮০ মার্কস রেখে লিখিত ১০ মার্কস ও ভাইভাতে ১০ মার্কস রেখে মোট ১০০ মার্কসে সিলেকশন দেন সেটাই হবে যথাযথ প্রক্রিয়া।’

তিনি আরও লেখেন, ‘আপনাদের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সমর্থন করতে পারলাম না। অ্যাকাডেমিক রেজাল্টধারী ও গবেষণায় পারদর্শীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। আমি হলফ করে বলতে পারি যত বড় নামকরা প্রফেসর হউক তাকে লিখিত পরীক্ষায় বসালে সেও পাশ করতে পারবে না। কাজেই এই লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে একটা অশুভ প্ল্যানকে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’

সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মো. জামিরুল ইসলাম ফেসবুকে লেখেন, ‘এটি অবশ্যই অতীতের চেয়ে অনেক ভালো একটি প্রক্রিয়া। তবে আমি রেজাল্টে ১৫; প্রবন্ধ/প্রকাশনায় ১০ মার্কস রেখে লিখিত ২৫ মার্কস; ভাইভাতে ২৫ মার্কস ও ডেমোন্ট্রেশন ক্লাসে ২৫ রেখে মোট ১০০ মার্কসে সিলেকশন দেওয়ার পক্ষপাতি। সেটাই হবে অপেক্ষাকৃত ভালো প্রক্রিয়া। এটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হলেও ভালো প্রার্থী পাওয়ার সুযোগ হবে। তবে বর্তমানে যা অনুশীলন করা হচ্ছে তা অতীতের চেয়ে ভালো। এক্কেবারে ভালো প্রক্রিয়ায় যাওয়া কঠিন। আশা করি প্রশাসন বিবেচনায় নেবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence