রাবি সমন্বয়কদের পৃষ্ঠপোষক রাশেদুলের নিয়োগ অবৈধ দাবি, উপাচার্যের কড়া জবাব

উপাচার্য সালেহ্ হাসান  নকীব
উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব  © টিডিসি ফটো

সম্প্রতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬ মাসের জন্য চারজনকে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে চারজনের এ নিয়োগে শুধু জনসংযোগ দপ্তরে নিয়োগ পাওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের পৃষ্ঠপোষক রাশেদুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাম ছাত্রসংগঠনের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ বিষয়ে কড়া ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। 

উপাচার্য বলেন, ‘এই নিয়োগে কোনো আইনের ব্যত্যয় ঘটানো হয়নি। যারা এটা নিয়ে আলোচনা করছেন, তারা ডাহা মিথ্যা কথা বলছেন। এখানে কোনো কোটার প্রশ্ন নেই, কোনো সমন্বয়কের প্রশ্ন নেই। আমরা তাদের একটা দায়িত্ব দিয়েছি। সেটা তারা পালন করতে পারলে থাকবে, না পারলে থাকবে না।’

উপাচার্য আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রয়োজন মনে করলে অর্ডিন্যান্সের ভেতরে পরিষ্কার আছে যে তিনি ছয় মাসের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে পারেন। এ নিয়োগের বৈধতা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলবে, তারা হয় লেখাপড়া জানে না অথবা না জেনে কথা বলছে। কাজেই এ বৈধতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।’

সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, আরেকটা বিষয় পরিষ্কার করি, এ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডহক ভিত্তিতে শতাধিক লোক কাজ করছে। এটা একেবারে রুটিন ব্যাপার। কে কীভাবে কী করেছে, সে দায়দায়িত্ব আমার নয়। আমি যে সময়টায় আছি, এ ছয় মাসের সময়ে স্বচ্ছতার বাইরে কোনোভাবে অ্যাডহক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।’

এদিকে অধ্যাপক নকীব উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারে দুইজন, মেডিকেল সেন্টার ও জনসংযোগ অফিসে একজন করে মোট চারজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

অ্যাডহক যেভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তার ব্যাখ্যায় উপাচার্য জানান, চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রয়োজন অনুযায়ী একজন চক্ষু চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আইসিটি সেন্টারের নতুন পরিচালক যোগ দিয়েছেন, ভর্তি পরীক্ষা বিকেন্দ্রীকরণ করে একটি টিম গঠন করা হয়েছে, যেখানে দুজনকে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অ্যাডহক নিয়োগ স্থায়ী নয়; পারফরম্যান্স বিবেচনায় পরবর্তীতে স্থায়ী করার জন্য বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আইসিটি সেন্টারে নিয়োগ পাওয়া দুজন সম্পর্কে উপাচার্যের কোনো পূর্বপরিচয় নেই; পরিচালকই তাদের দক্ষ মনে করে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে না জেনে যে নয়েজ সৃষ্টি করা হয়েছে, সেটি অনভিপ্রেত।

রাশেদ রাজনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তার বিষয়ে যে কথাটা বলা হচ্ছে, সেটা ডাহা মিথ্যা কথা। তাকে সমন্বয়ক হিসেবে নয়, যোগ্যতা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছ চিন্তা ও যোগাযোগ দক্ষতার অভাবে এ ধরনের প্রশ্ন উঠছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অর্জন রয়েছে, কিন্তু প্রচার-প্রসার কম। তাই দ্রুত একজনকে বাছাই করা হয়েছে, যদিও আরও অনেক যোগ্য ব্যক্তি থাকতে পারেন।’

উপাচার্য বলেন, ‘নবনিযুক্ত ব্যক্তি যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারলে থাকবেন, না হলে নয়। এতে কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটেনি এবং এটি সম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী হয়েছে। আমাদের দুইশোর বেশি অ্যাডহক নিয়োগ রয়েছে, এখন আমি প্রশ্ন রাখতে চাই—এই তিন-চারটি নিয়ে এত ভয়ংকর উত্তেজনা কেন?’

সবশেষে উপাচার্য বলেন, ‘এখানে কোনো কোটার প্রশ্ন নেই, কোনো সমন্বয়কের প্রশ্ন নেই। আমরা তাদের একটা দায়িত্ব দিয়েছি। সেটা তারা পালন করতে পারলে, আমরা ঠিক কাজ করেছি। পালন না করতে পারলে, আমাদের কাজ ঠিক হয়নি।’

এর আগে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরে অনুসন্ধান কাম তথ্য কর্মকর্তা পদে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের ‘পৃষ্ঠপোষক’ রাশেদুল ইসলাম। সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশের মাধ্যমে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence