জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমরণ গণঅনশনে শিক্ষার্থীরা
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৫ PM , আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩৫ PM

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভর্তি পরীক্ষা থেকে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আমৃত্যু গণঅনশন শুরু করেছেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ জাবি শাখার নেতাকর্মীরা। আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের মো. নাহিদ হাসান, একই ব্যাচের গণিত বিভাগের নাসিম আল তারিক, ৫০তম ব্যাচের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রায়হান, গণিত বিভাগের গালিব হাসান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের নাজমুল হাসান লিমন, আইবিএ বিভাগের ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান অন্বেষা ও কাজী মেহরাব।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে লড়াইয়ের মূলমন্ত্র ছিল বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল ও যৌক্তিক সংস্কার করা। সে জন্য অনেককে রক্ত দিতে হয়েছে। কিন্তু গণঅভ্যুত্থানের পর সেই কোটা নিয়ে আবারও অনশনে বসতে হচ্ছে, যা হতাশা ও লজ্জার বিষয়। ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক পোষ্য কোটার জন্য বঞ্চিত হচ্ছে গরিব কৃষক ও শ্রমিকের সন্তান। তাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিরতরে অযৌক্তিক পোষ্য কোটার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার জন্য আমাদের আমৃত্যু অনশনে বসা।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব নাহিদ হাসান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি রয়েছে, তা গোড়া থেকে উপড়ে দিতে আমরা অনশনে বসেছি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে আমাদের প্রাণের দাবি ছিল, মেধা দিয়েই আমাদের মূল্য যাচাই হবে, কোনো কোটা দিয়ে নয়। কিন্তু অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে এমন অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি জাবিতে বিদ্যমান থাকা আমাদের জন্য লজ্জার। এমনকি আমাদের ভাইবোনদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা প্রশাসনের জন্যও লজ্জার। অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বাতিল না হলে আমাদের কর্মসূচি চলবে।’
সংগঠক মোহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘জুলাইয়ে কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য আবু সাইদ, মুগ্ধসহ অসংখ্য ভাইবোন শহীদ হয়েছেন। এতো রক্ত কোটা পদ্ধতি বাতিলের জন্য দেওয়া হলো এরপরও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অযৌক্তিক পোষ্য কোটা রয়ে গেছে। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার ও হতাশার বিষয়। অযৌক্তিক এ কোটার জন্য বঞ্চিত হচ্ছে গরিব কৃষক, শ্রমিকের সন্তান। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে অযৌক্তিক পোষ্য কোটার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করার জন্য আমরা আমৃত্যু গণঅনশনে বসেছি।’
অনশনে বসা শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, ‘পৌষ্য কোটার মতো বৈষম্য আর নেই। আমরা বৈষম্যহীন এক নতুন বাংলাদেশের জন্য জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছি। অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য গলার কাঁটা নামের পোষ্য কোটা চালু রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, যা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যত্যয় ঘটায়।’
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার সদস্যসচিব তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো অযৌক্তিক পোষ্য কোটা বিদ্যমান। আমরা দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে এই পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছি। যেহেতু এই কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই, সেহেতু এটি সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। এটা সম্পূর্ণরূপে বাতিল করতে হবে।’