ছাত্রলীগের সংঘর্ষে নিহত ঢাবি ছাত্র আবু বকর হত্যার পুনর্বিচার দাবি

মানববন্ধন
মানববন্ধন  © সংগৃহীত

২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলের ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে নিহত হন মেধাবী শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিক। এই হত্যাকাণ্ডের পুনর্বিচারের দাবিতে মধুপুরে মানববন্ধন করা হয়েছে।

আজ বুধবার দুপুরে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে ছাত্র-শিক্ষক ও জনতার ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়েছে। কর্মসূচির আয়োজন করে শহীদ আবু বকর স্মৃতি সংসদ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন নিহত আবু বকর সিদ্দিক। তিনি মধুপুর উপজেলার গোলাবাড়ী ইউনিয়নের গোলাবাড়ী গ্রামের দরিদ্র রুস্তম আলীর ছেলে।

কর্মসূচিতে আবু বকর হত্যার প্রহসনমূলক বিচার প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে ফের বিচার কার্য শুরুর দাবি করে সামনে আরও কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন নিহত আবু বকর সিদ্দিকের বাবা রুস্তম আলী, বড় ভাই আব্বাস আলী, ছোট ভাই ওমর ফারুক, মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র কর, প্রাক্তন অধ্যক্ষ বজলুর রশীদ খান, মধুপুর সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মোন্তাজ আলী, ঢাবির একই বিভাগের ও মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র আনোয়ার হোসেন, শহীদ স্মৃতির প্রাক্তন ছাত্র আবদুল লতিফ পান্না, সাংবাদিক এস এম শহীদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এস এম সবুজ, ইকরামুল হক অনিক প্রমুখ।

বক্তারা জানান, ২০১০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি রাত আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সংঘর্ষ হয়। এ সময় স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক ছাত্র আবু বকর সিদ্দিক নিজ কক্ষে অবস্থানকালে গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩ ফেব্রুয়ারি মারা যান তিনি। এতে আরও ৩০ জন আহত হন। এ ঘটনায় ঢাবির আইন বিভাগের ছাত্র আহত ওমর ফারুক শাহবাগ থানায় ১০ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর নামে মামলা করেন। প্রায় আট বছর চলে মামলা। বাদীর পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সরকারি কৌঁসুলি। ২২ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ২০১৭ সালের মধ্যভাগে বাদী ও আবু বকরের পরিবারের অজান্তে মামলার রায়ে ছাত্রলীগের ১০ নেতাকর্মীকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। রায়ে আবু বকরের হত্যায় কে দায়ী, তা নিশ্চিত হয়নি। এদিকে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর আদালতের দায়রা জজ জাহিদুল কবিরের আদালতে খালাস পাওয়া ছাত্রলীগের ওই নেতাকর্মী বর্তমানে সরকারি চাকরিসহ নানা পেশায় যুক্ত।

আবু বকরের বড় ভাই আব্বাস আলী ও ছোট ভাই ওমর ফারুক জানান, রায়ের ৭ মাস পর ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে খবরটি শুনে হতাশ হন তারা। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আপিলও করেননি, এমনকি তাদেরও আপিল করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছেন। ফলে তাদের আড়াল করে দেওয়া রায় ত্রুটিপূর্ণ। যে কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ফের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।


সর্বশেষ সংবাদ