জাবি ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা আন্দোলনকারীদের প্রত্যাখান

  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসনের এ নির্দেশকে প্রত্যাখান করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের লিখিত অনুলিপিতে দেখা যায়, ১৪, ১৫ ও ১৬ জুলাই কোটা আন্দোলনের কারণে সংঘটিত বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় দুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেগুলো হলো- পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলো। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসসমূহ যথারীতি খোলা থাকবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনা করে ১৭ জুলাই তারিখ বিকেল ৪টার মধ্যে আবাসিক হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হলো।

তবে প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিক ভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রার ভবনের নিচতলা ভাংচুর চালায় । এসময় কয়েকজন শিক্ষক ও সাংবাদিক আহত হয়েছে বলে জানা যায়। এসময় আন্দোলনকারীরা ভিসিসহ অন্যান্য শিক্ষকদের রেজিস্ট্রার ভবনে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল ত্যাগের যে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষার্থীরা সেটা প্রত্যাখান করেছে। আর আমাদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের অনুপ্রবেশকারীরা আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতে রেজিস্ট্রার অফিস ভাংচুর চালিয়েছে। আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই হামলার সাথে জড়িত না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবো'।

অন্য সমন্বয়ক আব্দুর রশিদ জিতু বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি জানিয়ে আসছি। আমাদের কেউই ভাংচুরের সাথে জড়িত না। ছাত্রলীগ তাদের অনুসারীদের দিয়ে এই ভাংচুর চালিয়েছে। আমরা এর দায়ভার গ্রহন করবো না'।

এদিকে প্রশাসনিক ভবন ভাঙ্গচুরের ঘটনায় দুপুর দেড়টার দিকে সাজোয়া যান সহ প্রায় দুই শতাধিক পুলিশ প্রবেশ করে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অফস ও ট্রাফিক) মো. আব্দুল্লাহ হেল কাফী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতিতে ক্যম্পাসের জান মাল রক্ষা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন বিঘ্নিত না হয় এজন্য আমরা এসেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবিরকে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন- এমন প্রশ্ন করলে তিনি চুপ থাকেন। তিনি বলেন, এখানে এখন পর্যন্ত ৭-৮ জন শিক্ষকও আহত হয়েছে। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করবে'।


সর্বশেষ সংবাদ