বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে চবি, ভাগ্য নির্ধারণ কাল

সর্বশেষ গত দুদিনে শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে
সর্বশেষ গত দুদিনে শাখা ছাত্রলীগের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে  © ফাইল ছবি

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নির্দেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিশৃঙ্খলাকারী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে অছাত্রদের বের করতেও নেওয়া হবে পদক্ষেপ। এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আগামীকাল রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিশৃঙ্খলকারীদের বিরুদ্ধে ঠিক কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা এ সভায় চূড়ান্ত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর সৌরভ সাহা জয় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চাই। ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। এবারের ভর্তি পরীক্ষাও আসন্ন। সুতরাং, কোনো রাজনৈতিক নাম ব্যবহার করে যাতে কেউ ফের বিশৃঙ্খলায় জড়াতে না পারে, সে পরিবেশ আমরা নিশ্চিত করতে চাই। এছাড়া এর আগেও যারা বিশৃঙ্খলার ঘটনায় জড়িয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারের সঙ্গে আজ শনিবার কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

মন্ত্রীর সঙ্গে উপাচার্যের আলাপ শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুগ্রুপের মধ্যে চলমান সংঘাত ও সংঘর্ষের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সাথে কথা বলেছেন। এ সময় মন্ত্রী সংঘাত ও সংঘর্ষের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অনুরোধ করেছেন।

কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের নাম ব্যবহার করে যেন কোন দায়ী ব্যক্তি নিষ্কৃতি না পায় এ বিষয়ে সচেতন থাকতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতি শিক্ষামন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধের প্রেক্ষিতে আগামীকাল রবিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক এক সভা আহ্বান করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার কে এম নূর আহমদকে নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার।

এর আগে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় চায়ের দোকানে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে বগিভিত্তিক সিএফসি গ্রুপের এক কর্মীকে মারধর করেন সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা। এ ঘটনার জেরে সেদিন রাতেও সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ছাত্রলীগের এই দুই পক্ষ। বারবার সংঘর্ষে জড়ানোর প্রশ্নে তারা একে অপরকে দোষারোপ করছে।

সিএফসির কর্মীরা শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী এবং সিক্সটি নাইনের কর্মীরা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের জেরে গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকে রাত সাড়ে ৯টায় পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ অভিযানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে অভিযান চালায় প্রশাসন। এসময় হলগুলো থেকে ক্রিকেট খেলার স্টাম্প, বাঁশ ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

সহকারী প্রক্টর সৌরভ সাহা জয় বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া এসব বিশৃঙ্খলার ঘটনায় তদন্ত চলমান রয়েছে। কিছু প্রতিবেদন হাতে এসেছে। আবার কিছু ঘটনায় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কিছু ঘটনা আবার আদালতে ঝুলে আছে। সবমিলিয়ে অপরাধ করে আর কেউ ছাড় পাবেন না। আমরা এরকম একটা ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে চাই।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে আমরাও নিরাপত্তাহীনতায় থাকি। তবুও আমরা প্রাথমিকভাবে তাদের বুঝিয়ে হলে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে সেটি আমাদের একার পক্ষে সম্ভব হয় না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন হয়। কিন্তু দেখা যায়, আমরা যেভাবে আমরা তাদের সহায়তা চাই অনেক ক্ষেত্রে তারা সেভাবে পদক্ষেপ নিতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব বিষয়গুলো কালকের সভায় তুলে ধরবে।


সর্বশেষ সংবাদ