টিএসসির উচ্চশব্দে গান-বাজনায় ৪ হাজার ছাত্রীর ভোগান্তি

স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস ঢাবি ভিসির

শামসুন নাহার হল এবং রোকেয়া হল
শামসুন নাহার হল এবং রোকেয়া হল  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে গান-বাজনার ফলে প্রতিনিয়তই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির দুটি ছাত্রী হলের ৪ হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে। বর্তমানে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর সেমিস্টার ফাইনাল চলছে। তাদের অভিযোগ, এ গান-বাজনার শব্দের জন্য রাতের বেলায় পড়াশোনাতে কোনোভাবেই মনোযোগ দিতে পারছেন না তারা। তাছাড়া ঘুমে প্রচণ্ড ব্যাঘাত ঘটছে টিএসসির পাশে অবস্থিত শামসুন নাহার হল এবং রোকেয়া হলের ছাত্রীদের। এজন্য বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন তারা।  

এ বিষয়ে জানতে চইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি। এটা কিভাবে নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং স্থায়ী সমাধানে কি করা যায় আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেবো।

জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিটি সাংস্কৃতিক চর্চার একটি জায়গা। যেখানে বিভিন্ন দিবস কিংবা সংগঠনের নিয়মিত অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও কনসার্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগের অ্যালামনাইয়ের অনুষ্ঠান এ টিএসসি প্রাঙ্গণে হয়ে থাকে। তবে এসব অনুষ্ঠান যেন বিষফোড়া হয়ে আছে পাশেই অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টির শামসুন নাহার হল এবং রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীদের জন্য। কারণ এসব প্রোগ্রামে উচ্চস্বরে বাজানো গানগুলোর ফলে ব্যাহত হচ্ছে তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম এবং পড়াশোনায়। বিশেষ করে রাতের বেলায় তাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন ব্যাহত হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির রোকেয়া হলের আবাসিক শিক্ষার্থী নিকিতা পাল বলেন, টিএসসিতে যেহেতু সব শিক্ষার্থীদের একটি মিলনমেলা আর সব বিভাগের প্রোগ্রাম করার ব্যবস্থা আছে তাই সকল শিক্ষামূলক কর্মসূচি বা আনন্দ অনুষ্ঠান করা যেতেই পারে। তাই বলে প্রতিনিয়ত উচ্চস্বরে গান আর বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশে কোনো আধুনিক, উচ্চাঙ্গসংগীত বাজানো উচিত নয়। এতে সকল শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ব্যাহত হয় আর পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ বজায় থাকার কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। তাই মাঝে মাঝে অনুষ্ঠান হলেও তার আওয়াজ সীমিত করা হোক।

হলটির ২২-২৩ সেশনের আরেক শিক্ষার্থী আছিয়া আক্তার বলেন, সামনে ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু না পারছি ঠিক মতো পড়তে, না পারছি ঘুমাতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জোনের মধ্যে এতো উচ্চশব্দে, এতো দীর্ঘ সময় সকাল, দুপুর, রাত অবিরত গান-বাজনা হচ্ছে। এসব কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে কিভাবে? আমরা কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।   

শামসুন নাহার হলের ভুক্তভোগী আবাসিক শিক্ষার্থী রেবেকা আফরোজ বলেন, ফাইনাল পরীক্ষা চলছে কিন্তু এ গান-বাজনার শব্দের জন্য পড়াশোনায় কোনোভাবেই মনোযোগ দেওয়া যাচ্ছে না। রিডিংরুমে পর্যন্ত এ শব্দ শোনা যায়। সকাল নেই, রাত নেই যখন খুশি এগুলো চলতে থাকে। ঠিকভাবে ঘুমানোও যায় না।   

এ বিষয়ে রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, টিএসসিতে গান-বাজনা তো নতুন হয় না। আমার কাছে অদ্যাবধি কোনো শিক্ষার্থীর লিখিত বা মৌখিক কোনো কমপ্লেইন আসেনি। আমাদের জেনারেল সভায়ও এ ধরনের বিষয় আসেনি।

শামসুন নাহার হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এতে আসলেই ব্যাঘাত ঘটে। শুধু আমাদের হল যে তা নয় রোকেয়া হলেও। টিএসসি যেহেতু একটি সেন্ট্রাল জায়গায় কর্তৃপক্ষ এখানে চিন্তাভাবনা করে সমাধান দিবেন। এখানে আমরা হল থেকে কোনো সমাধান দিতে পারছি না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. মাকসুদুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, এ ঘটনায় আমাকে কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ জানিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমি অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নিয়ে এসব বন্ধও করেছি।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি আমি উপাচার্য স্যারকেও জানিয়েছি যাতে একটি স্থায়ী সমাধানে আসা যায়। আলোচনা হচ্ছে এখানে কি করা যায় তা নিয়ে। যেহেতু এখানে প্রোগ্রামও হবে আবার শব্দও যেন না হয় কারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সমস্যা হবে। আমার মনে হয় আমরা একটি সমাধানে যেতে পারবো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence