ভর্তি পরীক্ষার পাঁচ মাসেও পাঠদান শুরু করতে পারেনি জাবি
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১০:২৭ AM , আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩৮ PM
ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পাঁচ মাসেও শেষ হয়নি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া। ভর্তি কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় শুরু করা যাচ্ছে না শ্রেণি পাঠদানও। এতে এতে ক্লাস শুরুর আগেই সেশনজটের আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৮ জুন ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়ে ২২ জুন শেষ হয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর এবারের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়েছে। তবে ভর্তি পরীক্ষা শেষ হওয়ার এতদিনেও প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম নভেম্বরে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরুর আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত তারিখ নির্ধারণ করতে পারেনি ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা কমিটি। এছাড়া তুলনামূলকভাবে বিগত বছরগুলোতে সবার শেষে শ্রেণী পাঠদান শুরু করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি।
এদিকে, কবে নাগাদ প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হবে এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। ভর্তি পরীক্ষার এতদিনেও ক্লাস শুরু না হওয়াতে শিক্ষার্থীরা সেশন জট সহ নানা ধরনের শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। সকল সমস্যা সমাধান করে অনতিবিলম্বে ক্লাস শুরুর দাবি তাদের।
২০২২-২৩ সেশনে ভর্তি হওয়া নবীন শিক্ষার্থী ইয়াকুব ইসলাম শাহেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছিল নভেম্বরের দিকে ক্লাস শুরু হবে। কিন্তু এখনও সেটার খোঁজ খবর নাই। অথচ একইসাথে পরীক্ষা নেওয়া সব বিশ্ববিদ্যালয়েই অনেক আগে ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। এতে আমরা তীব্র সেশনজটের শঙ্কায় ভুগছি।
আরও পড়ুন: জাবি ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে ধরা বুয়েটের ছাত্র!
একই সেশনে বাংলা বিভাগে ভর্তি হওয়া আরেক নবীন শিক্ষার্থী মো. হাসান বলেন, ভর্তি পরীক্ষা সেই জুন মাসের দিকে শেষ হলেও এখনও ক্লাস শুরু হয়নি। দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় জাহাঙ্গীরনগর দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। বর্তমান প্রতিযোগীতা মূলক চাকরির বাজারেও আমরা নিঃসন্দেহে পিছিয়ে পড়ছি।
তিনি বলেন, শুনলাম যে আবাসিক হল চালু না করতে পারার জন্য ক্লাস শুরুতে দেরি হচ্ছে। আমরা দু'এক মাস কষ্ট করেও থাকতে পারবো। ছাত্রজীবনে এত আরাম আয়েশের জন্য আমরা ত জীবনযুদ্ধে পিছিয়ে পড়তে চাই না। আশা করছি কর্তৃপক্ষ দ্রুতই ক্লাস শুরুর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এই বিষয়ে কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক বলেন, নতুন বর্ষের ক্লাস শুরুর বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে সকল ডিনদের নিয়ে একটি সভা হয়। গত মাসে উপাচার্য সেই সভার তারিখও দিয়েছিলেন। তবে তিনি সেটা স্থগিত করেন। এখন সভায় না বসা পর্যন্ত ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত জানানো সম্ভব নয়। তাছাড়া নতুন হল গুলোর আসবাবপত্র ও জনবল সংকট জনিত জটিলতায় ক্লাস শুরুর বিষয়টি বিলম্ব হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা বলেন, প্রথম বর্ষের ক্লাস কবে থেকে শুরু হবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আর এ বিষয়ে কোনো তথ্যই আমার কাছে নেই।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে সাংবাদিকদের তিনি নভেম্বরে ক্লাস শুরুর কথা বলেছিলেন।
সে সময় তিনি বলেছিলেন, আমরা চাচ্ছি না নবীন শিক্ষার্থীরা গণরুমে উঠুক। এ সংস্কৃতি বন্ধ করতে আমরা তৎপর। এছাড়া নবনির্মিত হলগুলোতে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে লোকবল নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। আশা করি এ কাজ শেষ হলে নভেম্বরের মধ্যে হল চালু করে নতুন ব্যাচের ক্লাস শুরু করা যাবে।