ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

‘প্রোগ্রাম না করায়’ জুনিয়রকে হল থেকে বের করে দিলেন ছাত্রলীগ নেতা

ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম অনিক
ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম অনিক  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রলীগের নিয়মিত প্রোগ্রামে যেতে অপরাগতা প্রকাশ করায় এক বৈধ শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় হল সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে। বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে ঢাবির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৫০৬ নম্বর রুমে এই ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি একটি মেসে অবস্থান করছেন।

ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম এনামুল ইসলাম নোমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৭-১৮ বর্ষের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী। তিনি ৫০৮ (গ) নম্বর রুমের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু তিনি ৫০৬ নম্বর রুমে পলিটিক্যাল সিটে থাকতেন।

অপরদিকে এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতার নাম মাইনুল ইসলাম অনিক। তিনি তথ্য বিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৬-১৭ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি রাজনীতিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের অনুসারী। তিনি একাধারে ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধু হলের সহ-সভাপতি এবং বরিশাল জোনের পদ প্রত্যাশী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বরাতে জানা যায়, নিজের বৈধ সিটের মেয়াদ ৪ মাস বাকি থাকতেই অভিযুক্ত অনিক (হলের বৈধ সিট নেই) তাকে সিট থেকে সরিয়ে অন্য জুনিয়রকে দেন। সেই জুনিয়রের মাধ্যমে এনামুলকে হল ত্যাগে বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। পরবর্তীতে তাকে যেকোনো রুমে ফ্লোরিং করে থাকতে বলা হয়। কিন্তু সিনিয়র শিক্ষার্থী হিসেবে ফ্লোরিং করে থাকতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাকে হল থেকে বেরিয়ে যেতে বলেন ছাত্রলীগ নেতা অনিক।

আরও পড়ুন: ছাত্রলীগ বের করে দেওয়ার পর মাহতাবকে হলে তুলে দিল প্রশাসন

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এনামুল ইসলাম নোমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ঘটনার শুরু ১৫ আগস্ট থেকে। আমাকে কোরামের নেতা অনিক ভাই প্রতিদিন প্রোগ্রামে যেতে বলতো। এমনকি বিসিএস পরীক্ষার আগের রাতেও আমাকে প্রোগ্রামের জন্য ডাকা হয়। আমি মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। এখন চাকরির জন্য পড়াশোনা করছি।

তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট অনিক ভাই আমার এক বন্ধুর মাধ্যমে আমাকে জানায় আমার সিট ক্যান্সেল করে অন্য জুনিয়র হাসনাইনকে দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে অনিক ভাই আমাকে কিছু না বলায় আমি চুপ থাকি। কিন্তু পরের দিন জুনিয়র হাসনাইন এসে বলে অনিক ভাই আমাকে এই সিট দিয়েছেন। আপনাকে অন্য ব্যবস্থা করতে বলেছেন। তখন আমি অনিক ভাইয়ের রুমে যাই। কিন্তু তিনি আমাকে কিছু না বলে আমাকে রুমে পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে ২ দিন পর অনিক ভাই আমাকে বলে ‘তোকে সিট দিয়ে লাভ কি? তুই তো প্রোগ্রাম করিস না?’।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এনামুল বলেন, চাকরির পড়া অবস্থায় এভাবে প্রোগ্রাম করা সম্ভব না বলে আমি জানাই। পরের দিন হাসনাইন পুনরায় এসে আবার আমাকে রুম ছাড়তে বলে। তার সাথে আমার কথা কাটাকাটি হলে সে আমাকে অনিক ভাইয়ের সাথে চ্যাটিং দেখায়। পরবর্তীতে আমি অনিক ভাইকে জানালে তিনি আমাকে সিট ছেড়ে ফ্লোরে থাকতে বলেন। প্রথম বর্ষের মত প্রতিদিন প্রোগ্রামে গেলে আমাকে পুনরায় সিটে রাখা হবে বলে জানান।

‘‘কিন্তু হলের ফ্লোরে থাকার মত জায়গা ও পরিবেশ না থাকায় বাধ্য হয়েই গতকাল (৩০ আগস্ট) আমি হল ছেড়ে দেই। বর্তমানে আমি একটা মেসে অবস্থান করছি’’- জানান এনামুল।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা মাইনুল ইসলাম অনিককে একাধিকবার কল করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ফোন খোলার পরে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমি ঘটনাটা সাংবাদিকদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। সেই শিক্ষার্থী বা অন্য কেউ আমার কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। আপনারা তাকে আমার সাথে দেখা করতে বলবেন। তার কাগজপত্র ঠিক থাকলে আমি নিজে তাকে সিটে তুলে দেবো। 

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকেও একাধিকবার কল করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence