চবি ভিসির সুপারিশ গ্রহণ করেনি সিন্ডিকেট, নিয়োগ হয়নি প্রক্টর-পত্নীর

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়ার স্ত্রী অভি বড়ুয়াকে নিয়োগ দিতে নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশ বাতিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ সিন্ডিকেট। শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৪তম সিন্ডিকেটে অভি বড়ুয়ার নিয়োগের সুপারিশ বাতিল করা হয়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিন্ডিকেটের একজন সদস্য জানিয়েছেন, আবেদনপত্রে ত্রুটিপূর্ণ তথ্য দেওয়া, প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করা ও পালি বিভাগের সভাপতির আপত্তির কারণে অভি বড়ুয়ার নিয়োগের সুপারিশের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থই আমাদের স্বার্থ। অনেকে আমার কাছে এসেছে। আইন যেটা বলে আমি সেটাই বলেছি। আমি ব্যক্তি দেখিনি, চেহারা দেখিনি। এটা আমার বিবেচ্য বিষয় নয়। আমার কাছে বিবেচ্য বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন—জানান ওই কর্মকর্তা।

পালি বিভাগের শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য একজন স্থায়ী ও একজন অস্থায়ী পদে মোট দুজন প্রভাষক নিয়োগের কথা ছিল।  তবে বিজ্ঞাপিত পদের বাইরে অতিরিক্ত আরও দুজনকে সুপারিশ করেছে বোর্ড, যা ইউজিসির নির্দেশনা ও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের পরিপন্থী। এ কারণে গত ৮ এপ্রিল অন্যায়ভাবে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ তুলে চবি উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে প্রার্থী সজীব সিংহ ও বোধি মিত্র শ্রামনের পক্ষে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট ও চট্টগ্রাম জজকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ রাসেল। 

এছাড়াও এই নিয়োগ বোর্ডে (১৩ মার্চ) অভি বড়ুয়া নামে এক প্রার্থীকে পালি বিভাগের প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য ভাইবা বোর্ডে সর্বোচ্চ সুপারিশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখ্তার। এসময় বিভাগীয় সভাপতির নোট অব ডিসেন্ট (দ্বিমত পোষণ) ও পরিকল্পনা কমিটির মতামত আমলে নেওয়া হয়নি। অভি বড়ুয়া নামের এই প্রার্থী ২০০৩ সালে শিক্ষাজীবন শেষ করলেও গত ২০ বছরে তার কোনো চাকরির অভিজ্ঞতা, উচ্চতর ডিগ্রি কিংবা প্রকাশনা নেই।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, আবেদনের শর্তাবলি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন অভি বডুয়া। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে শতকরা হিসেবে প্রাপ্ত নম্বর উল্লেখ করার শর্ত থাকলেও শিক্ষক নিয়োগ আবেদনে তিনি তা উল্লেখ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয় বিধি অনুসারে, অসম্পূর্ণ ও ত্রুটিপূর্ণ দরখাস্ত সরাসরি বাতিলযোগ্য।

চবির পালি বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি বিভাগীয় পরিকল্পনা কমিটি থেকে বাদ পড়েছিলেন এবং  ভাইবা পরীক্ষায় যথাযথ প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হননি। মূলত অভি বড়ুয়া উপাচার্যের আস্থা-ভাজন সহকারী প্রক্টর অরূপ বড়ুয়ার স্ত্রী। তাই অধিকতর যোগ্য প্রার্থী থাকলেও স্বজনপ্রীতি করে অভি বড়ুয়াকে নিয়োগের জন্য সর্বোচ্চ সুপারিশ করেন উপাচার্য। তবে ৫৪৪ তম সিন্ডিকেটে এটি বাতিল করা হয়।

এসব বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো ধরেনর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ