৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ জাবি ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ মে ২০২৩, ০৭:৩৪ PM , আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৫, ১০:৪৯ AM
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন পানধোয়া এলাকার এক ডিশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে। চাঁদার টাকা না দিলে জীবননাশেরও হুমকি দেন তারা। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার (৮ মে) আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মমিনউল্লাহ মমিন।
আজ মঙ্গলবার (৯ মে) আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে পানধোয়া বাজারে আমরা গিয়েছি তদন্ত করার জন্য। পরবর্তীতে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটা আমরা দেখব।
ভুক্তভোগী মমিন বলেন, গত এক দেড় মাস ধরে আমাদের সাথে সমস্যা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা এসে আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের লোক বলে তারা আমাদের পরিচয় দেয়। এই মাসের ১ তারিখ থেকে আমাদের ডিশ ব্যবসা একেবারেই বন্ধ আছে।
কারা চাঁদা দাবি করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা শান্ত মাহবুব ও হাছিবুর রহমান। তাদের সাথে আরও ৭-৮ জন এসেছিল তাদের চিনতে পারিনি।
শান্ত মাহবুব বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আর হাছিবুর রহমান ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। দুজনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারি।
ভুক্তভোগী মমিন আরও বলেন, অভিযুক্তরা এখন পর্যন্ত আমাদের ১৩টি হাইব্রিড ক্যাবল এমপ্লিফায়ার নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ৯ জায়গায় তার কেটে ফেলেছে, তার নিয়ে গেছে ২৬ কোরের প্রায় ৫০০ মিটার। আমাদের প্রায় পাঁচ শতাধিক বাসায় ডিশ দেওয়া আছে, তারা কেউ এখন ডিশের সুবিধা পাচ্ছে না। পুরোপুরিই বন্ধ আছে আমাদের সার্ভিস।
কেন বন্ধ আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা বলেছে সার্ভিস বন্ধ রাখতে, এমনকি সার্ভিস চললে আমাদের প্রাণ নাশেরও হুমকি প্রদান করেন। আমার লাইন ম্যান খাইরুল ইসলামকে কয়েক দিন আগে ওঠিয়ে নিয়ে যায় তারা।
লাইনম্যান খাইরুল ইসলাম বলেন, ১ এপ্রিল হাছিব ভাই আমাকে ওঠিয়ে নিয়ে যায় আল-বেরুনী হলের সামনে। সেখানে গিয়ে আমাকে মারধর করে এবং আমার পকেটে ৭-৮ হাজার টাকা ছিল তা নিয়ে নেয়। যদি ডিশের কাজে যেন আমবাগান এলাকা কিংবা ক্যাম্পাসে না যাই সেটা বলে দেয়; গেলে জবাই করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়।
তবে অভিযুক্ত শান্ত মাহবুব ও হাছিবুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট কাহিনী। তারা আমাদের নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে মানহানীর মামলা দায়ের করব।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান বলেন, আমার এলাকায় এ ধরনের ঘটনা যখন ঘটে তখন অবশ্যই আমরা শঙ্কাবোধ করি এবং আতঙ্কিত থাকি। যেহেতু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুতরাং এসব বিষয়ে তাদের সাথে ঝামেলা হলে বড় ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।