নির্জন জায়গায় ডেকে নিয়ে জাবির নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিং
- জাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৩, ০৮:১৯ PM , আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১১:১২ AM
নিজের নাম, ব্যাচ, ঠিকানার পরিচয় দিতে সামান্য ভুল করতেই র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (১৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান কারখানার পেছনে সুন্দরবন এলাকায় বিভাগের প্রোগ্রামের প্রস্ততিমূলক মিটিংয়ের কথা বলে ডেকে নিয়ে এই র্যাগ দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৫০তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা ৫১তম আবর্তনের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগ দিচ্ছিলো বলে জানা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিভাগের ১ম বর্ষের এক নবীন শিক্ষার্থী জানান, সিনিয়ররা ডিপার্টমেন্টের একটি প্রোগ্রামের প্রস্ততিমূলক মিটিংয়ের কথা বলে আমাদের সেখানে নিয়ে যায়। পরে ওই এলাকায় যাওয়ার পরই তাদের রূপ পরিবর্তন করে ফেলে। প্রথমেই তাদের সালাম না দেয়াতে চরম গালিগালাজ ও ধমক দেয়া শুরু করে। পরে পরিচয় দিতে সামান্য ভুল হওয়াতে আমাদের একজনকে চেয়ার (র্যাগিংয়ের একটা অংশ) বানায়। এসময় আমাদের মানসিকভাবে হেনস্থা করা হয়। প্রায় দুই ঘন্টার ধরে আমাদের উপর এমন অমানবিক নির্যাতন করা হয়।
একই ব্যাচের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি পড়াশোনা করতে। যেখানে সিনিয়রদের সাথে আমরা একাডেমিক সহযোগিতার মাধ্যমে পরিচিত হবো। তার পরিবর্তে শিকার হতে হচ্ছে মানসিক নির্যাতনের। এরূপ আচরণ কাম্য নয়।
এ ঘটনায় সন্দেহের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল বডি সেখানে গেলে তারা জানায়, জুনিয়রদের নিয়ে তারা সবাই সেখানে ঘুরতে এসেছে।
এ ব্যপারে ওই বিভাগের ২য় বর্ষের দুই ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ নাফিসা তাবাসসুম ও পারভেজ জানান, আমরা ওদের নিয়ে বসেছিলাম। কিছুদিন পর আমাদের বায়োটেক ক্লাবের একটা প্রোগ্রাম আছে সেটা নিয়ে কথা বলেছি। র্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
র্যাগিং এর ঘটনার বিষয়ে বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি উম্মে সালমা যোহরা বলেন, আমি ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টির সত্যতা সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রনি হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার সাথেই সহকারী প্রক্টর মনির শিকদার ও অনুপ মজুমদারসহ ঘটনা স্থলে যাই। গিয়ে কাওকে না পেলেও এরকম একটি ঘটনার খোঁজ পেয়েছি। তবে ছাত্রদের সাথে কথা বললে তারা র্যাগিং এর বিষয়টি অস্বীকার করে, হয়তো ভয় পেয়ে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আমরা বিভাগের শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি। তারা খুব দ্রতই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
এর আগে, গতকাল রবিবারও অর্থনীতি বিভাগের ৪৯তম ও ৫০তম আবর্তনের একদল শিক্ষার্থীদের একই জায়গায় র্যাগিং কর্মকাণ্ড চালিয়েছিল বলে জানা যায়।