‘রাবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শিক্ষকের জিডি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’

 শিক্ষকের অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে শিক্ষার্থীর সংবাদ সম্মেলন
শিক্ষকের অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে শিক্ষার্থীর সংবাদ সম্মেলন  © টিডিসি ফটো

অসৌজন্যমূলক আচরণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রশিদুল আলম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। শিক্ষকের দায়েরকৃত এই অভিযোগকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটে এ সংবাদ সম্মেলন করেন আহমেদ মুন্সী নামের ওই শিক্ষার্থী। 

আহমেদ মুন্সী তার লিখিত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন, আমি প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার পরীক্ষায় অকৃতকার্য হই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক, পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সাথে ক্লাস আমার ক্লাস করার কথা। তবে সংশ্লিষ্ট কোর্সের সকল শিক্ষক আমাকে ক্লাস করার অনুমতি দিলেও ১০৪ নম্বর কোর্সের শিক্ষক ড. মো. রশিদুল আলম স্যার আমাকে ক্লাস থেকে বের করে দেন এবং বিভাগীয় সভাপতির অনুমতি নিয়ে ক্লাসে আসতে বলেন। 

তাই ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য বিভাগীয় সভাপতি বরাবর ১৩ ফেব্রুয়ারি আবেদন করি ও আবেদনের কপি বিভাগের সকল শিক্ষক, কলা অনুষদের ডীন ও ভিসি বরাবর প্রদান করি। পরে ১৫ ফেব্রুয়ারি আমি জানতে পারি যে, ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ আমি যেদিন আবেদনটি করি সেই রাতেই অধ্যাপক ড. মো. রশিদুল আলম স্যার মতিহার থানায় আমার বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। 

ডায়েরিতে আমার বিরুদ্ধ অসৌজন্যমূলক আচরণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও বানোয়াট। তিনি আমার শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক। তাঁর সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা বা তাকে হুমকি দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমি যে স্যারের সাথে অসৌজন্যমূলক আচারণ করিনি তা ক্লাসে উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা বলতে পারবে। এটা যে আমার স্বভাব সুলভ আচরণ নয়, তা বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকরাও জানেন। 

ক্লাসের শুরুতেই ড. মো. রশিদুল আলম স্যার আমাকে বের করে দিলে ক্লাস শেষ হওয়ার পূর্বেই আমি সিরাজী ভবন ত্যাগ করি। সিঁড়িতে হুমকি তো দূরের কথা সেদিন ক্লাস শেষে ড. মো. রশিদুল আলম ও বিভাগীয় সভাপতি প্রফেসর ড.মো. আতাউর রাহমান স্যারের সাথে আমার দেখাই হয়নি।

আমি যদি স্যারকে হুমকি দিতাম তাহলে কেন ২০ দিন পর আমার বিরুদ্ধে তিনি জিডি করলেন? স্যার ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সাধারণ ডায়েরিতে তিনি আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা পুরোটাই ভিত্তিহীন। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে সাজানো।

এর আগে, বেলা সাড়ে বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে আহমেদ মুন্সী নামের এই শিক্ষার্থীর শাস্তির দাবিতে উর্দু বিভাগের ব্যানারে মানববন্ধন করেছে কয়েকজন শিক্ষার্থী। তবে এই মানববন্ধন-এর ব্যাপারে বিভাগের সভাপতিসহ অবগত নয় কোন শিক্ষকই। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী কর্তৃক হুমকির বিষয়টি আমি অবগত কারণ আমার সামনেই এ ঘটনাটি ঘটেছে। তবে আজকো ওই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের দাবিতে ড. রশিদুল আলম মানববন্ধন করেছেন সে বিষয়ে আমি অবগত নই আমি বিভাগের শিক্ষকদের মাধ্যমে শুনেছি। 

আরও পড়ুন: ‘গণরুম’ বিলুপ্তির দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল

বিভাগের সভাপতির এমন বক্তব্যকে মানতে নারাজ উর্দু বিভাগের অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এমনটা করেনি। এই অভিযোগের পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে।

ওই শিক্ষার্থীকে নির্দোষ দাবি করে উর্দু বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দীন বলেন, আমার জানা মতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী খুবই নম্র ভদ্র ছেলে। কোনো শিক্ষককে সে হুমকি দিবে বলে আমার বিশ্বাস হয়না। আমরা আজকে ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আবেদন পেয়েছি। ড. রশিদুল আলম কেন যে ওই শিক্ষার্থীর নামে থানায় জিডি করেছে সে বিষয়ে আমি অবগত নয়। জিডিতে লেখা ২৪ জানুয়ারি তাকে হুমকি দিয়েছে ওই শিক্ষার্থী তবে তিনি জিডি করেছেন গতকাল। ২০ দিন পর হঠাৎ জিডি এবং আমাদেরকেও হুমকির বিষয়ে কিছু বলেনি। আজকে বাহিরের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের দাবিতে তিনি মানববন্ধন করেছেন যা বিভাগের সভাপতিও কিছু জানে না।

২০দিন পর কেন থানায় জিডি করা হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে উর্দু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. রশিদুল আলম বলেন, আমি এতোদিন কাউকে জানায়নি। আমি গোপনে ওই শিক্ষার্থীকে অবজারভেশনে রেখেছিলাম তবে ২০দিন দেখার পর আমার কাছে তাকে অন্য রকম লেগেছে। তাই তার বিরুদ্ধে আমি জিডি করেছি।  

শিক্ষার্থীর বহিষ্কারের দাবিতে যে মানববন্ধন করা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। কে বা কারা মানববন্ধন করেছেন সে বিষয়ে আমি অবগত নই।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence