জাবির শিক্ষক নিয়োগে ‘প্রভাব খাটানোর’ তদন্ত দাবি ছাত্রফ্রন্টের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষক নিয়োগে ক্ষমতার প্রভাব খাটানো ও অনৈতিক পন্থা অবলম্বনের অভিযোগ সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে ছাত্র সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবী জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘পাবলিক হেলথ্ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে একাধিক নারী শিক্ষার্থীর সাথে ‘অনৈতিক’ সম্পর্কের অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাচ্ছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট।’

যুক্ত বিবৃতিতে সভাপতি আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা একজন শিক্ষকের নামে এইরকম অভিযোগকে আমলে না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভুমিকা পালন করছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে শুধু নষ্ট করেই ফেলছে না, বরং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়েও হুমকি হয়ে উঠছে। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষকরা দেশগড়ার কারিগর। তাদের নিয়োগ পদ্ধতিতে এমন অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত না হলে পুরো প্রশাসনের চরিত্র নিয়েই বিশাল প্রশ্নের উত্থাপিত হয়। শিক্ষক নিয়োগে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করা শিক্ষক ও প্রশাসনের মর্যাদাবোধ ও দায়িত্ববোধকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

এর আগে, গত মঙ্গলবার ‘‘ললিপপ হাতে জাবি শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষিকার সেলফি, ক্যাম্পাসে পোস্টারিং’’ শিরোনামে জনিকে নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। পরে এ ঘটনায় গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম জনির অনৈতিক কর্মকাণ্ডের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

পৃথক বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে অনৈতিক সম্পর্কের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্ক ও অর্থের বিনিময়ে নারী শিক্ষার্থীদের ফলাফল ও নিয়োগে বেআইনি প্রভাব বিস্তার করেছেন বলে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

শিক্ষক ফোরামের নেতারা বলেন, ওই একই শিক্ষক ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় ক্ষুব্ধ জনতা কর্তৃক প্রহারের শিকারও হয়েছেন। এসব অভিযোগের সত্যতা থাকলে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য অসম্মানজনক হবার পরও উক্ত শিক্ষককে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে বহাল রেখে অসামাজিক কার্যকলাপের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হয়েছে, যার দায় প্রশাসন কোনভাবেই এড়াতে পারে না।

এ ব্যাপারে ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান বলেন, ‘যদি ওই শিক্ষক দোষী হয়ে থাকে তাহলে তার চাকরিতে থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ ঘটনায় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাকর ব্যাপার।’

এসব বিষয়ে সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, ‘যেগুলো ছড়ানো হচ্ছে সেসব সত্য নয়। আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করে প্রশাসনকে চিঠি দেবো। সেক্ষেত্রে প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত দেবে তা আমি মেনে নেবো। আর এখন যেসব চলছে তা আমাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে।’

জনি আরও বলেন, ‘এ অবস্থায় আমার পক্ষে এই দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করা সম্ভব নয়। বিপর্যস্ত মানসিক অবস্থার কারণে হয়তো দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছে না কিংবা হবে না। এখন প্রক্টরিয়াল বডির প্রধান হিসেবে প্রক্টরের কাছে ব্যক্তিগতভাবে এসব অবহিত করে, কি করতে পারি পরামর্শ চাইবো।’


সর্বশেষ সংবাদ